নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকার বাসায় গিয়েও আহত বিএনপি নেত্রী সামিরা আজিম
দোলার দেখা পাননি কেন্দ্রীয় বিএনপি’র শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা-৯
(লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের প্রাথমিকভাবে মনোনয়নপ্রাপ্ত নেতা আবুল কালাম।
রবিবার দুপুরে কুমিল্লার লাকসামের ছনগাঁও এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে
সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিমের কন্যা সামিরা আজিম
দোলা।
সোমবার সকালে আহত দোলাকে দেখতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
যান আবুল কালাম। তিনি জানেন, দোলা সেখানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
ভর্তি আছেন। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারেন, আহত নেত্রী উন্নত
চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গেছেন। দোলার খোঁজে জরুরি বিভাগে ওয়ার্ডে খোঁজ করেও
তাকে না পেয়ে হতাশ হন তিনি।
হাসপাতালের কর্তব্যরত কর্মীরা জানান, রবিবার রাতে বিএনপি নেত্রীকে ভর্তি করা হলেও রাত গভীর হওয়ার পর তিনি ঢাকায় চলে যান।
দোলার
সঙ্গে দেখা না পেলেও আবুল কালাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য আহত বিএনপি
কর্মীদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন। হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত
করে শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।
হাসপাতালে এ সময় তার সঙ্গে
উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক
আমিরুজ্জামান আমির, সরোয়ার জাহান দোলনসহ বেশ কয়েকজন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের
নেতা।
কুমিল্লা মেডিকেলে দোলার দেখা না পেয়ে সোমবার বিকেলে আবুল কালাম
ছুটে যান প্রয়াত সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিমের ঢাকার বাসায়। সেখানে গিয়েও
তিনি আহত দোলার দেখা পাননি। পরে মোবাইল ফোনেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা
করেও ব্যর্থ হন তিনি।
দোলার ব্যক্তিগত সহকারী মো. শাহজাহান বলেন,
ম্যাডাম রবিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিকেলে ভর্তি হন, তবে তিনি কখন ঢাকায়
গেছেন তা আমরা জানি না।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম
আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান দোলন বলেন, আবুল কালাম ভাই দোলার সঙ্গে দেখা করে
হামলায় জড়িতদের শনাক্ত ও দলীয়ভাবে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু তিনি দোলার দেখা পাননি, ফোনেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য,
রবিবার দুপুরে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ছনগাঁও এলাকায়
লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হামলা,
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মনোনয়নপ্রত্যাশী সামিরা আজিম
দোলাসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।
আহতদের প্রথমে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে এবং পরে গুরুতর আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো
হয়। রবিবার সন্ধ্যায় দোলা সেখানে ভর্তি হন বলে জানা যায়।
ঘটনার পর
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও মাঠ পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র
ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেকেই অভিযোগ করছেন, দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং মনোনয়ন
ঘিরে স্বার্থান্বেষী মহল এই সংঘর্ষের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
স্থানীয়
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এ ধরনের অভ্যন্তরীণ বিভাজন বিএনপির সংগঠনকে দুর্বল
করে দিচ্ছে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের মধ্যে অনাস্থা
বাড়িয়ে তুলছে।
