নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার বুড়িচংয়ে চোরাকারবারিদের ফেলে দেওয়া ভারতীয় আতশবাজির
একটি বস্তা ট্রেনের নিচে পড়ে বিকট বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১০
নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পীতাম্বর এলাকার রেয়াছত আলী ফকির মাজার সংলগ্ন
রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, চোরাকারবারিরা প্রতিদিন সালদানদী
ও শশীদল রেলস্টেশন হয়ে চট্টলা এক্সপ্রেস ও নাসিরাবাদ ট্রেনে বিভিন্ন অবৈধ
পণ্য পাচার করে। ওইদিন সন্ধ্যায় সদর রসুলপুর রেলস্টেশনে ম্যাজিস্ট্রেটের
নেতৃত্বে অভিযান হওয়ার খবর পেয়ে চোরাকারবারিরা তড়িঘড়ি করে বস্তাবন্দি
মালামাল ট্রেনের বাইরে ফেলে দেয়।
এ সময় আতশবাজি ভর্তি একটি বস্তা মহানগর গোধূলী এক্সপ্রেস ট্রেনের চাকার নিচে চলে যায় এবং বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণের
সময় ট্রেনে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। তবে ট্রেন
চলন্ত অবস্থায় থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েনি, ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়
এবং শতাধিক যাত্রী রক্ষা পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পরে স্থানীয়রা রেললাইন থেকে ফেলে দেওয়া ভারতীয় পণ্য সংগ্রহ করতে থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট এগুলো সরিয়ে ফেলে। তারা আরো জানায়, চোরাকারবারিরা ট্রেন থামার আগেই বস্তাগুলো ফেলে যায়।
স্থানীয়
বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা নাগাদ স্টেশনের বাথরুম ও
অফিসকক্ষে অবৈধ মালামাল রাখা হয় এবং সুযোগ বুঝে ট্রেনে তোলা হয়। একজন
নিয়মিত যাত্রী জানান, এসব বস্তার আড়ালে ইয়াবা, গাঁজা, ক্রিস্টাল মেথ (আইস),
আতশবাজি ও অন্যান্য পণ্য পাচার করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, এতে কিছু ট্রেন কর্মকর্তা ও স্টেশন মাস্টার জড়িত থাকতে পারেন।
তারা
আরো জানায়, বেশ কয়েকটি সক্রিয় চোরাকারবারি সিন্ডিকেট পুলিশ, রেলওয়ে
নিরাপত্তা বাহিনী ও বিজিবির কিছু অসাধু সদস্যকে ‘ম্যানেজ’ করে এই অবৈধ
ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের অভিযানের পরও মাঝে মাঝে পুনরায় এ
কর্মকাণ্ড শুরু হয়।
এ বিষয়ে সদর রসুলপুর স্টেশন মাস্টার প্রসেনজিৎ
চক্রবর্তী বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট সানোয়ার জাহানের নেতৃত্বে চট্টলা
এক্সপ্রেসে অভিযান চলাকালীন বস্তাটি বিস্ফোরিত হয়। তবে কোনো বড় ধরনের
ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
