
মেয়েদের
আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি শীর্ষ তিন ব্যাটারের একজন। নিজেকে
শুধু তারকা হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করেননি, হয়ে উঠেছেন ব্র্যান্ড।
কিন্তু
স্মৃতি মান্ধানার একটা আক্ষেপ রয়ে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক যুগ
পার করে ফেললেও বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখতে না পারার আক্ষেপ।
এর আগে একাধিকবার
তীরে এসে তরি ডুবেছে ভারতের। অবশেষে অপেক্ষার অবসান হয়েছে। নাবি মুম্বাইয়ে
গত রোববারের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী
ক্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
এর মধ্য দিয়ে মান্ধানারও
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার পূর্ণতা পেয়েছে। ২৯ বছর বয়সী এই ব্যাটার শিগগিরই
সংসারজীবনও শুরু করতে যাচ্ছেন। বলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংগীত পরিচালক
পলাশ মুচ্ছলকে এ মাসেই বিয়ে করতে যাচ্ছেন তিনি।
মান্ধানার ব্যক্তিগত
জীবন তো বটেই, তাঁর সম্পদের পরিমাণ-আয় নিয়েও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে কৌতূহল
আছে। সেই কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করা যাক
টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি,
ইকোনমিক টাইমস, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, জি নিউজসহ ভারতের কয়েকটি
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে স্মৃতি মান্ধানার সম্পদের
পরিমাণ ৩৪ কোটি রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪৬ কোটি ৭৩ কোটি টাকার বেশি।
তাঁর
আয়ের বড় একটা অংশ আসে ক্রিকেট, বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে
চুক্তি ও ব্যক্তিগত ব্যবসা থেকে। ভারতের হয়ে এখনো খেলছেন এমন নারী
ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে ধনী।
ভারত জাতীয় নারী দলের ক্রিকেটাররা
এখন পুরুষ ক্রিকেটারদের সমান ম্যাচ ফি পান। সেই অনুযায়ী, মান্ধানা প্রতিটি
টেস্টে ১৫ লাখ, ওয়ানডেতে ৬ লাখ ও টি-টোয়েন্টিতে ৩ লাখ রুপি পেয়ে থাকেন।
ভারতীয়
ক্রিকেটে বোর্ডের (বিসিসিআই) কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের
ক্যাটাগরি ‘এ’-এর অন্তর্ভুক্ত মান্ধানা। চুক্তি অনুযায়ী তিনি বোর্ড থেকে
বছরে পান ৫০ লাখ রুপি।
উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ (ডব্লুপিএল) মেয়েদের আইপিএল নামেও পরিচিত। এই টুর্নামেন্টে তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নেতৃত্বে।
২০২৩
সালে ডব্লুপিএলের প্রথম মৌসুমের আগে তাঁকে ৩ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে কেনে
বেঙ্গালুরু, যা তাঁকে বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া নারী
ক্রিকেটারদের একজন করে তোলে। ২০২৬ মৌসুমের জন্যও ফ্র্যাঞ্চাইজিটি তাঁকে ধরে
রেখেছে।
হুন্দাই, হিরো মোটোকর্প, রেড বুল, গার্নিয়ার, নাইকি,
মাস্টারকার্ড, হ্যাভেলস, র্যাংলার, গালফ অয়েল, বাটা, হার্বালাইফ, পিএনবি
মেটলাইফ, রেক্সোনা ইত্যাদির মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি আছে
মান্ধানার। এ ছাড়া তিনি ইউনিসেফ ইন্ডিয়ার শুভেচ্ছাদূত। একেকটি ব্র্যান্ড
থেকে মান্ধানা ৭৫ লাখ থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপি নেন।
মান্ধানা তাঁর
জন্মশহর ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাংলিতে বাস করেন। সেখানে তাঁর একটি
বাড়ি আছে। সেই বাড়িতে ব্যক্তিগত জিম, হোম থিয়েটার, পাঠাগার ও বাগান আছে।
এসএম ১৮ স্পোর্টস ক্যাফে নামে একটি রেস্তোরাঁও আছে মান্ধানার। এ ছাড়া
মুম্বাই ও দিল্লিতে তাঁর কিছু সম্পত্তি আছে।
বিলাসবহুল গাড়ির প্রতি
মান্ধানার খুব একটা ঝোঁক নেই। তিনি প্রথমে তাঁর বাবার জন্য মারুতি সুজুকি
সুইফট কিনেছিলেন। পরে তাঁর ভাইয়ের জন্য কেনেন হুন্দাই ক্রেটা। নিজে চালান
রেঞ্জ রোভার ইভোক, যার মূল্য প্রায় ৭৩ লাখ রুপি।
