নগরীতে
পর্যাপ্ত সিসিক্যামেরা না থাকায় চুরি ছিনতাই প্রতিরোধে বেগ পেতে হচ্ছে
পুলিশকে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চুরি
ছিনতাই বেড়ে যাওয়া বিষয়ে জেলা উন্নায়ন সমম্বয় কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশের
প্রেক্ষিতে এই কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল মালিক। নগরীর
নিরাপত্তায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশর স্থাপন করা বেশিরভাগ
ক্যামেরা
থেকে প্রাপ্ত ফুটেজ কাজে না আসায় তদন্তের কাজে প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হচ্ছে
পুলিশকে। এছাড়া যে পরিমান ক্যামেরা আছে তা অপরাধ শনাক্ত করতে পর্যাপ্ত নয়।
সভা থেকে জেলা পুলিশের প্রতিদিন এবং রাতে আরও টহল বৃদ্ধি করার আহবান
জানানোর প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল মালিক আরও বলেন আমাদের
জনবল খুবই কম আমি পুলিশ সুপারে সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ
নেয়া হবে।
রোববার ১৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন
কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা
প্রশাসক আমিরুল কায়সার।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল
ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুলতানা
রাজিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল মালিক, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা মাইনউদ্দিন চিশতি, গণপ‚র্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর
রাশেদুল করিম, সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন, কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক
কৃষিবিদ মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, উপজেলাসম‚হের ইউএনওগন
উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলার রাস্তা, ড্রেন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও যানজট
নিরসন নিয়ে আলোচনা হয়। নির্মাণাধীন রাস্তা ও ড্রেনের গুনগত মান ঠিক রাখতে
নিয়মিত তদারকির জন্য বলা হয়।
নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতা:
সভাপতির
বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ঘটনা ঘটছে
সারাদেশে। বিষয়গুলো নিছকই দুর্ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। এটা
পরিকল্পিতভাবে সরকারী স্থাপনাকে টার্গেট করছে- এমনও ধারনা রয়েছে।
গুরুত্বপ‚র্ণ সরকারী স্থাপনা, নথি সংরক্ষণে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে হবে। এগুলো
সবই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মনে করছি। সবার যার যার অবস্থান থেকে সচেতনতা
জরুরি। যার যার অফিস স্থাপনা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে
হবে। আগামী ২/৩ মাস খুবই গুরুত্বপ‚র্ণ। যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে সচেতন
থাকতে হবে।
টায়ফয়েডের ৩২ শতাংশ টিকাদান শেষ:
সিভিল সার্জন ডা. আলী
নুর বশির জানান, টাইফয়েড টিকার টার্গেট ১৫ লাখ ৮৬ হাজার। ইতিমধ্যে আমরা ৪
লাখের মতো টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। যা লক্ষ্যমাত্রার ৩২ শতাংশ। আশা করছি
নির্দিষ্ট সময়ে রেজিস্ট্রেশনের শতভাগ টিকাদান সম্পন্ন করা হবে। নিয়মিত
অভিযানে অনুমোদন না থাকায় দুটি ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে।
বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ:
সিভিল
সার্জন ডা. আলী নুর বশির জানান, জানুয়ারি থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে।
কুমিল্লা জেলায় এক হাজার ৯৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এক হাজার ৮৯৬ জন চিকিৎসা
নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে। দাউদকান্দির কিছু গ্রামে ভয়াবহভাবে ছড়িয়েছিল
ডেঙ্গু। তবে এখন অবস্থান ভালো। আমরা এরপরেও আগামী এক মাস সতর্ক থাকতে বলেছি
সকল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
কৃষি জমির টপ সয়েল রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে:
কৃষি
অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান বলেন, নির্বিকারে কৃষি জমি
ধ্বংস করা হচ্ছে। ড্রেজার ও এস্কেভেটর দিয়ে ইটভাটায় কৃষি জমির উপরিভাগের
মাটি নিয়ে যাওয়া হয়। কৃষি জমির টপ সয়েল রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের
গুরুত্ব দিতে হবে। কারন টপ সয়েল তৈরি হতে ৩০/৪০ বছর সময় লেগে যায়। টপ সয়েল
রক্ষা করতে না পারলে একসময় কৃষি জমি নিচু ও অনুর্বর হয়ে পরবে।
সভায় সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে যথাযথ ভ‚মিকা পালনের জন্য সকল দপ্তর প্রধানকে আহবান জানানো হয়।