কুমিল্লার
দেবিদ্বার উপজেলায় ছোট বোনকে জিন তাড়াতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে এক কবিরাজের
বিরুদ্ধে এক গৃহবূধকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে কুদ্দুস
মিয়া নামে ওই ভন্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে দেবিদ্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারীর মা জোসনা বেগম। অভিযুক্ত কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া
উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের জিলানীর
ছেলে। তবে এ ঘটনায় এখনো ওই কবিরাজকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
থানায় দেয়া
লিখিত ওই অভিযোগ থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জুন সকালে ওই গৃহবুধু
তার ছোট বোনের জিনের আছড় ছাড়াতে কবিরাজ কুদ্দুস মিয়ার বাড়ীতে গেলে কুদ্দুস
কবিরাজ বিভিন্ন ভাবে তাদের প্রলোভন দেখিয়ে তার বসত ঘরের একটি গোপন কক্ষে
নিয়ে যায়। পরে ওখানে বড়বোনকে জোর করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারন করে। এরপর ভিডিও
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারীর কাছ এক লক্ষ
পয়তাল্লিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া। গত দিনমাস ধরে
কবিরাজ ওই নারীকে ভয় দেখিয়ে একাধিক বার শারিরিক সম্পর্ক করেন।
ভুক্তভোগী
ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার ছোট বোনের জিনের আছড় ছাড়াতে গেলে ওই
কবিরাজ চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগে ৩০০ টাকার একটি নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে আমার
স্বাক্ষর নেয়। দু’একদিন যাওয়ার পর এক পর্যায়ে সে আমাকে তার বসতঘরের একটি
গোপন কক্ষে নিয়ে যায়, এরপর জোর করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেন। একপর্যায়ে
সেই মুহূর্তে ভিডিও আমার ইমুতে দেয় এবং মোট অংকের টাকা দাবি করে। আমি
বিভিন্ন স্থান থেকে তাকে টাকা এনে দিলেও সে আমার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি
দিয়ে একাধিকবার আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে সে আমার ভাইকে বিদেশ
পাঠানোর কথা বলে তিন লক্ষ টাকা নেয়। আমি ওই টাকা ফেরত চাইলে ভিডিও ছড়িয়ে
দেয়ার হুমকি দিয়ে আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে
অস্বীকৃতি জানালে সে আমার স্বামীর বাড়ির লোকদের কাছে ভিডিওর ছবি ছড়িয়ে দেয়
এবং এ বিষয়ে কোথাও আইনি ব্যবস্থা নিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি
দেয়।
ভক্তভোগী ওই নারীর মা বলেন, ভন্ড কবিরাজের ফাঁদে পড়ে আমার তিনটি পরিবার ভেঙে গেছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে তার বিচার চাই।
অভিযুক্ত
কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া বলেন, তাদের এক মেয়ে অসুস্থ ছিলো, আমার কাছে চিকিৎসা
করাতে আনে। দুই মাস আগে তারা এমন একটি অভিযোগ নিয়ে আমাদের গ্রামে আসে, তখন
আমি কক্সবাজারে ছিলাম। আমাদের এলাকার মেম্বার অভিযোগের ব্যাপারে তাদের বসার
জন্য সময় দিলে তারা আর আসে নাই। আমার বিরুদ্ধে আনীত ধর্ষণের অভিযোগ
সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)
মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীর মা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে, তদন্ত সাপেক্ষে ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে
আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।