শাহীন আলম।
কুমিল্লা–সিলেট
আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার অংশের সংস্কার কাজ আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে
শুরু না হলে, ওই সড়কে ধান চাষ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক
পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকালে এ সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে।
অডিওতে হাসনাত আবদুল্লাহর কথোপকথনের অপরপাশে ছিলেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা।
অডিও ওই ক্লিপে হাসনাত আবদুল্লাহকে বলতে শোনা গেছে,
“অক্টোবর
মাসের ২০ তারিখ থেকে যদি কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার
নিউমার্কেট থেকে ফুলগাছতলা পর্যন্ত সড়কের কাজ শুরু না করেন, আমি আপনাকে
জানিয়ে দিচ্ছি, এই রাস্তায় কোনো গাড়ি চলবে না।”
এর জবাবে প্রকৌশলী
খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, “রাস্তা ব্লক করে দেবেন, অবশ্যই আপনার অধিকার
আছে। এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করার কিছু নেই।”
পরে হাসনাত আবদুল্লাহ
বলেন,“এই সড়কের দেবিদ্বার অংশ দিয়ে গাড়ি চলতে পারে না, কেউ হাঁটতেও পারে
না। এ বিষয়ে অনেকেই নিয়মকানুন দেখিয়েছেন। আপনি আপনার পরামর্শককে
বলবেন—অক্টোবরের ২০ তারিখের মধ্যে যদি কাজ শুরু না হয়, তাহলে এখানে ধান
লাগিয়ে দেব। এসব ভাঙাচোরা অংশে ধান লাগিয়ে দেব, মাছও চাষ করব। তখন এখান
দিয়ে কোনো গাড়িই যাবে না। আমি আপনাকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখছি।”
সড়ক ও
জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসানবলেন, “আমি যদি নিয়মের
মধ্যে থাকি, তাহলে আমাকে কিছুদিন সময় দিন। আর বাকি যেটা মেরামতের কাজ, সেটা
তো আমাদের করতেই হবে।”
জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “মেরামত দিয়ে কিছু
হবে না। বারেরা থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত এই সড়ক চলাচলের অযোগ্য।
দেবিদ্বারের একটাও রাস্তা ঠিক নেই।”
মঈনুল হাসানবলেন, “ঠিক আছে, আমি আমার সিনিয়রদের জানিয়ে দিচ্ছি।”
এ
বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল
হাসানবলেন, “দেবিদ্বার অংশের সংস্কারকাজ শুরু করার জন্য একটি নির্দিষ্ট
প্রক্রিয়া রয়েছে। সেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই কাজের অগ্রগতি হচ্ছে। ধারণা
করা যাচ্ছে, চলতি মাসের শেষের দিকে বা আগামী মাসের প্রথম দিকে কাজটি শুরু
করা যাবে।”
এ বিষয়ে হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, ভাঙাচোরা এই রাস্তায় মানুষ
সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষ যানজটে বসে থাকতে
হচ্ছে। আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেছি ২০ তারিখের মধ্যে
যদি এ সড়কের কাজ না করা হয় এ রাস্তা বন্ধ করে দেবো, জনগণকে সাথে নিয়ে এ
সড়কে ধান ও মাছ চাষ করব। সওজ থেকে আমাকে জানানো হয়ে তারা এ বিষয়ে খুব
শিঘ্রই পদক্ষেপ নিবেন।
উল্লেখ্য, দেবিদ্বার উপজেলা সদরে যানজট নিরসনে
গত মে মাসে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে সড়কবিভাজক
স্থাপন ও ইটের সলিং করে প্রশস্ত করা হয়। এর কিছু দিন পরই বর্ষায় ও গাড়ি
চাপে সড়কটি খানাখন্দে ভরে যায়। এতে যানজট ও জনভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। সড়কটি
নতুন করে আরসিসি ঢালাই করার প্রকল্প হাতে নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
