দেশের
১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর
পলোগ্রাউন্ড মাঠে ‘তারুণ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ এ মন্তব্য করেন
তিনি।
তিনি বলেন, “আজ এখানে যখন সভা হচ্ছে, তখন আরেকটি সভা হচ্ছে
আপনাদের নিউ মার্কেটে, ঢাকায়ও হচ্ছে। দাবিটা কী? দাবি হচ্ছে আওয়ামী লীগ
নিষিদ্ধ করা। আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষ এ আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না। কারণ এ
আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মানুষকে নির্যাতন করেছে। গণতন্ত্র
ধ্বংস করেছে, বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। অর্থনীতিকে বন্ধ করে দিয়েছিল।”
মির্জা
ফখরুল বলেন, “আমরা একটি কঠিন ও অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি। কারণ হাসিনা
পালিয়েছে। কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনও আছে। তারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে দেশে
আবার তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র আমাদের
তরুণদের সামনে টিকে থাকতে পারবে না। দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা যাদের দায়িত্ব
দিয়েছি আমাদের দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, তারা
সঠিকভাবে সে কাজ এখনও করতে পারছেন না। ফলে মাঝে মাঝে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।”
কিছু
মানুষ সব ভুলে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা মনে করে বাইরে থেকে
লেখাপড়া শিখে এসে আমাদের সামনে কিছু সুন্দর সুন্দর মুখরোচক কথা বললে জাতি
বোধহয় সবকিছু ভুলে যাবে। তাদেরকে বলব, দয়া করে আজকের এ সমাবেশ দেখেন; এতে
যদি আপনাদের সম্বিত ফিরে আসে জাতি উপকৃত হবে।”
তরুণদের উদ্দেশে তিনি
বলেন, “আমরা দেখতে চাই সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। যেখানে মানুষ মানুষকে
ভালোবাসবে, মাথা উঁচু করে থাকবে। আমাদের সমাবেশ মঞ্চে তামিম আছে। সে
চট্টগ্রামের ছেলে। সে অসংখ্য তামিম তৈরি করতে বলেছে। সবাই সেদিকে যাবেন।
চট্টগ্রামকে স্যালুট; শহীদ ওয়াসিমকে শ্রদ্ধা জানাই।”
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে শনিবার ‘তারুণ্যের’ সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান।
চট্টগ্রামের
পলোগ্রাউন্ড মাঠে শনিবার ‘তারুণ্যের’ সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় ক্রিকেট
দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ
সমাবেশ আয়োজন করে। তাতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর
খসরু মাহমুদ চৌধুরীও।
তিনি বলেন, “তামিমকে দেখে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে,
চট্টগ্রামের তরুণ সমাজ আজ ছক্কা মেরেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে
তরুণরা। শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনের বড় শক্তি ছিল তরুণরা।”
আমীর খসরু
বলেন, “বাংলাদেশকে জিম্মি করে কারো স্বার্থ আদায় করা যাবে না। যারা
পাঁয়তারা করছেন, তাদের সাবধান হতে হবে। দেশের মানুষ স্বৈরাচার বিদায় করেছে;
দেশের মানুষের মনোজগতের পরিবর্তনের ঢেউ এসেছে, তা অনুধাবন করতে হবে।”
৩১
দফার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট চাইবে তুলে ধরে
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট চাইব। জনগণ রায় দিলেই ৩১ দফা
সংস্কার বাস্তবায়ন হবে। সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন হবে। সেই সরকারই
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবে। এখানে কোনো গোজামিলের কথা নাই।
“কেউ যদি না বোঝে, তাহলে তাকে বোঝানো যাবে না। কেউ যদি জেগে ঘুমের ভান ধরে, তাহলে তাকে জাগানো যায় না।”
স্বেচ্ছাসেবক
দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা
ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না।
জাতীয় ক্রিকেট
দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। বিশেষ বক্তা ছিলেন
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। সমাবেশে জুলাই আন্দোলনে
চট্টগ্রামে শহীদ ছাত্রদলনেতা ওয়াসিমের বাবা শফিউল আলমও বক্তব্য রাখেন।
প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের নেতাকর্মী সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
তাদের
সঙ্গে ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম
খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিযুক্ত ব্যানার,
ফেস্টুন ও মাথার ব্যান্ড।