এ
কথা আমরা সবাই জানি, ডেঙ্গু একটি এডিস মশা বাহিত ভাইরাস জনিত রোগ। এডিস
মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে সাধারণত
ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর।
১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে,
আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে
ব্যথা মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে
পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।
সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু
জ্বর হয়- ক্ল্যাসিকাল এবং হেমোরেজিক। ক্ল্যাসিকাল জ্বর এ সাধারণত দুই থেকে
সাত দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। বিপজ্জনক হয়ে ওঠে হেমোরেজিকের ক্ষেত্রে। এই
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে জ্বর ভালো হয়ে যাওয়ার পর পাঁচ থেকে
সাত দিন পর অবস্থা মারাত্মক সংকটাপন্ন হতে পারে।
হেমোরেজিকের ডেঙ্গুর
ক্ষেত্রে রোগীর রক্তপাত হয়, রক্তের অনুচক্রিকা বা প্লাটিলেট এর মাত্রা কমে
যায় এবং রক্তের প্লাজমা কমে যায়। মারাত্মক জটিলতা থেকে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম
হতে পারে। এতে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে হ্রাস পায়। আক্রান্ত ব্যক্তির দাঁতের
মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত ঘটতে পারে। মলের সাথে বা বমির সাথে রক্ত যেতে
পারে।
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা না কমানো গেলে মৃত্যুর সংখ্যাও
বাড়বে। আক্রান্ত যত বেশি হয় মৃত্যুও হয় তত বেশি। এজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ
করতে হবে। প্রত্যেকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার খোলা আছে। আমাদের হাসপাতালেও
আছে। আমাদের কাছে এলে আমরা সেবা দেই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা দেরি
করে আসায় সমস্যা বেড়ে যায়।
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা না কমানো গেলে
মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়বে। আক্রান্ত যত বেশি হয় মৃত্যুও হয় তত বেশি। এজন্য
সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রত্যেকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার খোলা
আছে। আমাদের হাসপাতালেও আছে। আমাদের কাছে এলে আমরা সেবা দেই। কিন্তু অনেক
ক্ষেত্রে রোগীরা দেরি করে আসায় সমস্যা বেড়ে যায়। এছাড়া অনেকে দেরি করে এসে
ডেঙ্গুর এনএস১ পরীক্ষা করায়, এতে তাদের ডেঙ্গু নেগেটিভ আসে। এতে তারা ভাবে
তাদের ডেঙ্গু হয়নি বা নেই, নিশ্চিন্তে থাকে। তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডেঙ্গু
আক্রান্ত নারীর ক্ষেত্রে পিরিয়ডের সময়ও অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে অথবা
পিরিয়ড হওয়ার সময় না কিন্তু হঠাৎ করে তার পিরিয়ড সরে যেতে পারে আক্রান্ত
সংখ্যা কমে এলে মৃত্যুর ঝুঁকি এমনিতে কমে আসবে।
নারীরা এসব বিষয়ে
উদাসীন, ঘরের কাজকর্ম, রান্নাবান্না করছে। গৃহিনীরা ঠিকভাবে নিজের খেয়ালও
রাখছে না। এতে তারা হাসপাতালে দেরি করে আসে। এ কারণে তাদের মৃত্যুও বেশি
হয়। কিন্তু যদি দ্রুত হাসপাতালে এসে অসুস্থতা নির্ণয় হয়ে যায়, তখন তারা
প্রপার চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হতে পারে।
লেখক : উপ-পরিচালক, ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল, শ্যামলী, ঢাকা।