কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে ৮ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার
মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহিদুল হকসহ ৩ আসামির পুনরায়
দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। দুই দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার
(১৩ নভেম্বর) বিকেলে তাদেরকে আদালতে হাজির দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
শুনানি শেষ কুমিল্লার সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলী
আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা তিন আসামির দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর
করেন । রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অপর দুই আসামি হলেন - সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম
সচিব কিবরিয়া মজুমদার এবং কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার জহিরুল ইসলাম সেলিম।
আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে রিমান্ড কার্যকরের জন্য মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি ও মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু।
এর
আগে গত ১১ নভেম্বর সাবেক আইজিপি শহীদুল হক সহ ৩ আসামীর দুই দিন করে
রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে বুধবার বিকেলে তাদেরকে আদালতে
হাজির করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
আদালত পুনরায় দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কুমিল্লার আদালত
প্রাঙ্গণ ঘুরে ও আইনজীবীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা
ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বিকেল ৪টার দিকে তাদেরকে আদালতে এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসময় আদালতের কাঠগড়ায় অনেকটাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক আইজিপি শহিদুল
হক। তবে যুগ্ম সচিব কিবরিয়াকে বিষন্ন মনে এদিক সেদিক তাকাতে দেখা গেছে। যেন
আদালত প্রাঙ্গণে পরিচিতজন কাউকে খুজছিলেন তিনি। আদালতে কাঠগড়ায় সাবেক
আইজিপি শহিদুল হক এবং যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদার হেলমেট পরিহিত অবস্থায়
থাকলেও অপর আসামি জহিরুল ইসলাম সেলিমের মাথায় হেলমেট ছিল না। কাঠগড়ায় তাকে
অনেকটা স্বাভাবিকই দেখা গেছে ।
এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বাধি
পক্ষের আইনজীবীরা যখন রিমান্ডের বিষয়টি তুলছিলেন তখন অপর আসামি জহিরুল
ইসলাম সেলিম আদালতের কাছে প্রশ্ন রাখেন, 'মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমার
রিমান্ড চান কি-না?' তখন আদালত বলেন- 'আপনারও রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।' এরপর
আদালত প্রত্যেক আসামির দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এবং বিবাদী পক্ষের
আইনজীবীদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দেন।
এদিকে সাবেক আইজিপি শহিদুল
হক শহর ৩ আসামীকে রিমাণ্ড শেষে আদালতে হাজির করার পূর্বে আদালত প্রাঙ্গনে
ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সময় কোন প্রকার অপীতিকার
পরিস্থিতি এড়াতে সেনাবাহিনীর স্কট, পুলিশের স্পেশাল স্কটসহ ডিবি পুলিশ ও
অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য আদালত প্রাঙ্গনে হাজির ছিল। আদালত প্রাঙ্গনে
আসামিদেরকে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে এজলাসে হাজির করা এবং আদালত প্রাঙ্গণ
থেকে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা
গেছে।