পরীক্ষা
শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর জানা গেল শিক্ষার্থীদের হাতে যাওয়া প্রশ্ন পুরাতন
সিলেবাসের। বিষয়টি এক শিক্ষার্থীর নজরে আসলে নড়েচরে বসেন কেন্দ্র সচিব ও
দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ। প্রথম দেওয়া প্রশ্ন তুলে নিয়ে পুনরায়
শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন হাতে দেওয়া হয়। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের ১০ মিনিট
অতিক্রম হয়ে গেছে। পরীক্ষা শেষে অতিরিক্ত দশ মিনিট না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের
মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ
বদিউল আলম কলেজ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিএমটি দ্বিতীয় বর্ষের কম্পিউটার অফিস এপ্লিকেশন-০২
বিষয়ের পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে উপজেলার বাঁশকাইট ব্যারিস্টার
রফিকুল ইসলাম মিয়া ও হায়দরাবাদ সামছুল হক কলেজের কারিগরি শাখার
শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিএমটি দ্বিতীয় বর্ষের কম্পিউটার অফিস
এপ্লিকেশন-০২ বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। এই বিষয়ের আগের পুরাতন সিলেবাসের কোড ছিল
১৮২৩। নতুন সিলেবাস এর কোড হচ্ছে ২১৮২৩। কিন্তু ১৮২৩ কোড বিএম শাখার জন্য
প্রযোজ্য ছিল। অথচ কেন্দ্রে কোন বিএম পরীক্ষার্থী ছিল না। সকলেই নতুন
সিলেবাস এর বিএমটি শাখার শিক্ষার্থী ছিল এবং তাদের পরীক্ষার বিষয় কোড
২১৮২৩। পুরাতন সিলেবাসের ১৮২৩ কোডের দুই বান্ডেল প্রশ্ন খুলে
পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিলি করেন। একজন শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে তারা
বুঝতে পারে যে বিষয় কোডটি ভুল কাটা হয়েছে। তারপর নতুন সিলেবাসের ২১-৮২৩
কোডের বিষয়ের প্রশ্ন খুলে পুনরায় হলে প্রেরণ করা হয়। এরমধ্যে দশ মিনিট সময়
অতিবাহিত হয়ে যায়। তখন ছাত্রদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও হৈ-হুল্লোড় শুরু
হলে পরবর্তীতে ১০ মিনিট বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তাদেরকে নিভৃত করা
হয়। কিন্তু পরীক্ষা শেষে ১০ মিনিট সমন্বয় না করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের
মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরো জানা যায়, গত রবিবার বাংলা পরীক্ষা
শেষ হওয়ার পরদিন ওই ভেন্যুতে কয়েকটি সম্পূর্ণ ইনটেক উত্তরপত্র ও ২৫ থেকে
৩০টি অতিরিক্ত পেপার হল রুমে পড়ে আছে এমন সংবাদ পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ বদিউল
আলম কলেজ অধ্যক্ষ নুরুল হক একজন শিক্ষকের মাধ্যমে উদ্ধার করে খাতাগুলো নিজ
অফিসে সংরক্ষণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কেন্দ্রে থাকা একজন
শিক্ষক বলেন, সরকারি নিয়ম হচ্ছে, যে বান্ডেলের পরীক্ষা হবে, শুধুমাত্র সেই
বান্ডেলটি কাটা যাবে। বাকি বান্ডেল গুলো অক্ষত অবস্থায় ফেরত দিতে হবে।
কেন্দ্রে মোট চারটি বান্ডেলের মোড়ক কাঁটা হয়েছে, যা আইনত দন্ডনীয়। আর যিনি
কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি হচ্ছেন জেনারেল শাখার শিক্ষক। তাই
কারিগরি বিভাগ সম্পর্কে সে অনভিজ্ঞ।
এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব নজরুল ইসলাম ভূইয়া বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
মুরাদনগর
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, ১০
মিনিট দেরির কথাটি সঠিক নয়। প্রশ্ন দিতে ২/৩ মিনিট দেরি হয়েছে। পরে
পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।