বিরাজমান
রাজনৈতিক বৈরিতাকে প্রকট উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী
হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বৈরিতা, সেটা অত্যন্ত
প্রকট। এ বৈরিতা নিয়ে সামনে এগোনো কঠিন হবে। তা পরিহার করে দলগুলোকে
আলোচনার টেবিলে বসতে হবে।
রবিবার (২ জুন) দুপুরে ট্রান্সপারেন্সি
ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা
বলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রাজনৈতিক সংলাপের ওপর জোর দিয়ে সিইসি বলেন,
দলগুলোর মধ্যে আমি এখনও কোনও আলাপ-আলোচনা দেখছি না। তাদের মধ্যে যে বৈরিতা,
সেটা অত্যন্ত প্রকট। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এই প্রকট বৈরিতা থাকলে
সামনে এগোনো খুব কঠিন হবে। এই বৈরিতা পরিহার করে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে।
টিআইবির মতো সিভিল সোসাইটিও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে পারে।
নির্বাচন
কমিশনের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের
সামর্থ্য সীমিত। যতটুকু করা সম্ভব আমরা চেষ্টা করি। আমাদের অনন্ত সক্ষমতা
আছে, তা মোটেই না। নির্বাচন কমিশন একা কখনোই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন
করতে পারবে না, যদি না রাষ্ট্র ও সরকারের পলিটিক্যাল উইল এর সপক্ষে থাকে।
রাষ্ট্র ও সরকারের পলিটিক্যাল উইল সপক্ষে থাকলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী সঠিক দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হবে।
টিআইবিকে কমিশন থেকে আমন্ত্রণ
জানানো হয়েছিল জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরাই তাদের আমন্ত্রণ
করেছিলাম। তারা বলেছে, আমরা তথ্যটা যেন দ্রুত তুলি। কিছু ক্ষেত্রে তারা
বলেছে, আমরা দ্রুত তথ্য দিই না। আবার কিছু ক্ষেত্রে বলেছে আমরা ত্বরিতগতিতে
তথ্য দিয়েছি, তারা এর প্রশংসা করেছে। তারা বলেছে, আমরা কিছু ক্ষেত্রে
যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছি না। আমাদের কমিশনার আলমগীর সাহেব বলেছেন,
আমাদের আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে যে কতটুকু করতে পারবো বা পারবো না। আমাদের
হলফনামা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, হলফনামা ওয়েবসাইটে তুলে দিয়েছি। কিন্তু
প্রার্থীর সম্পত্তি বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোনও দায়িত্ব আমাদের
দেওয়া হয়নি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে হাবিবুল আউয়াল বলেন, টিআইবি মনে করে
নির্বাচন সুন্দর ও ফেয়ার হয়েছে কিন্তু একটা ঘাটতি রয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক
চেতনা থেকে যে ইনক্লুসিভ নির্বাচন, সেটা হয়নি। আমরা বলেছি, দেশের যে
সমস্যা, তা অনেকটা রাজনৈতিক। এসব সমস্যা নিরসন না হলে নির্বাচনব্যবস্থা আরও
স্টেবল হবে না। রাজনৈতিক বোঝাপড়াটা হয়ে গেলে নির্বাচন আরও সুন্দর ও সুষ্ঠু
হতে পারে।
সিইসি বলেন, তারা (টিআইবি) বলেছে, আমরাও বলেছি সিস্টেম
পরিবর্তনের কথা। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের কথা বলা হয়েছে। একাধিক দিনে ভোটের
কথা বলা হয়েছে। আমরাও বলেছি এটা হলে নির্বাচনে অধিক সংখ্যক ফোর্স নিয়োগ
করা সম্ভব হবে। মনিটরিং সহজ হবে।
এদিন টিআইবি নির্বাহী পরিচালক
ইফতেখারুজ্জমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ
অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে বৈঠক করেন। এ সময় হলফনামার তথ্য প্রকাশ,
হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে প্রতিনিধি
দল।