শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ব্যয় বেড়েছে
প্রকাশ: বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১:১৯ এএম |

প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ব্যয় বেড়েছে
শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের যেমন কিছু সাফল্য আছে, তেমনি ব্যর্থতাও অনেক। শিক্ষা খাতে সরকারের উদ্যোগের শেষ নেই, কিন্তু তার পরও বাংলাদেশে সবচেয়ে অবহেলিত খাতটি বোধ হয় শিক্ষা। ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কি নিশ্চিত করা গেছে?
‘বাংলাদেশে বিদ্যালয় শিক্ষা : মহামারি-উত্তর টেকসই পুনরুত্থান’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে শিক্ষার্থীপিছু পরিবারের শিক্ষা ব্যয় ২০২২ সালের তুলনায় প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে ৫১ শতাংশ বেড়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, এই ব্যয় বাড়ার প্রধান কারণ হলো কোচিং-প্রাইভেট এবং নোট-গাইড বইয়ের খরচ বৃদ্ধি পাওয়া।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর জন্য বার্ষিক পারিবারিক গড় ব্যয় ছিল ১৩ হাজার ৮৮২ টাকা। কিন্তু পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসেই প্রাথমিকে এই খরচ ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৬৪৭ টাকা। মাধ্যমিক স্তরের একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষার গড় খরচ এক বছরের ব্যবধানে ২০ হাজার ৭১২ থেকে বেড়ে ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্যয়ের চিত্রটি বের করা হয়েছে পঞ্চম ও নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের ভিত্তিতে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রাইভেট টিউটর, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক ফি, স্টেশনারিসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট পারিবারিক খরচ বেড়ে যাওয়া এবং মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান ধারার কারণে বেড়েছে শিক্ষা ব্যয়। প্রাথমিক স্তরে প্রায় ৪১ শতাংশ অভিভাবক এবং মাধ্যমিকে ১৭ শতাংশ অভিভাবক বলছেন, প্রতি সন্তানের জন্য তাঁদের মাসিক ব্যয়ের সামর্থ্য ছিল দুই হাজার টাকার মধ্যে, যা ২০২২ ও ২০২৩ সালের গড় ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম।
ভয়াবহ যে চিত্রটি এই গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের নোট-গাইড নির্ভরতা বেড়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রেণিকক্ষে যথাযথ পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নোট-গাইডের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদনের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, ২০২০ সালে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত-এমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০২৩ সালে এসে প্রাথমিক স্তর থেকে ঝরে পড়ার হার ৪.৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে ৬ শতাংশ। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাথমিক স্কুল বয়সীদের ৪১ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ৪৯ শতাংশ শিশুশ্রমে যুক্ত। ঝরে পড়া মেয়েশিশুদের অর্ধেকের বেশি বাল্যবিবাহের শিকার। সরকার এখন মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করায় জোর দিয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকেও ঝরে পড়ার হার একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। এটি দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতাই তুলে ধরে।
ঝরে পড়ার সঠিক কারণগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত প্রতিকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার নানা কারণ বিশ্লেষণ করেছেন। যেমন-মেয়েদের ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। অন্যদিকে শিক্ষা ব্যয় এবং কর্মমুখী শিক্ষার অভাবেও শিক্ষার্থীরা ঝরে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারা ঝরে পড়ছে, তা খুঁজে দেখা দরকার। আর সেখানেই উত্তরটা আছে।
শিক্ষা যেন সর্বজনীন হয়, তা রাষ্ট্রকেই দেখতে হবে। শিক্ষা যাতে ভীতিকর না হয়ে আগ্রহের বিষয় হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কিন্তু সবার আগে শিক্ষা ব্যয় কমাতে হবে। এর জন্য করণীয় কী, সেটা নির্ধারণ করাই এখন বড় কাজ।












সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft