মাসুদ পারভেজ।।
কুমিল্লা মহানগরীর চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসক। বুধবার (৭ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় জেলা প্রসাশক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী কুমিল্লা ক্লাবের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রকৃত রূপদান। ইতিমধ্যে এডহক কমিটি হয়েছে। কমিটি তাদের কাজ চলমান রেখেছে।
এদিকে টাউনহলে বীরচন্দ্র মিলনায়তন ও পাঠাগার ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পূর্বের কমিটিও অকার্যকর হয়ে পরেছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এডহক কমিটির মাধ্যমে পুননির্মাণের কাজ চলমান।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, টাউনহল মার্কেটের আয় আগে কোন এক ব্যাক্তি বিশেষের কাছে যেতো। টাউনহলের একাউন্টে আসতো না। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা মার্কেটের আয় টাউনহলের একাউন্টে আসছে। এখন মাসে ৬ লক্ষাধিক টাকা টাউনহল একাউন্টে জমা হচ্ছে।
স্টেডিয়াম মার্কেটের আয়ও আগে সরকারী কোষাগারে আসতো না। এখন ওই মার্কেটের আয় সরকারি কোষাগারে আসছে বলেনও জেলা প্রশাসক জানান।
উজিরদিঘীর ভরাট নিয়ে রেকর্ডের মালিক আবেদন নিয়ে এসেছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ দিঘীটি রক্ষা করা জরুরি। পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা শক্তভাবে না করে দিয়েছি। আপাতত দিঘিটি ভরাট করা থেকে রক্ষা করতে পেরেছি।
সদর দক্ষিণে একজন মালিকানা পুকুর রাতের আঁধারে অর্ধেক ভরাট করে ফেলেছে। খবর পেয়ে পরিবেশ আইনে মামলা হয়েছে। ভরাট হওয়া পুকুরটি আবার খনন করে জেলা প্রশাসক।
ফসলি জমির মাটি কাটার দায়ে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। জরিমানাসহ ২৩ জনের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় পুকুর ও ফসলি জমি রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের সহায়তা চান তিনি।
শহরের চিত্তবিনোদনের স্বল্পতা নিয়ে তিনি বলেন, কুমিল্লায় বিনোদের স্বল্পতা প্রকট। এখানে পার্ক বা সবুজায়ন নেই বললেই চলে। ২০ একর জায়গায় পূর্বের বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিরিয়াখানা ছিলো, যেটা এখন বন্ধ। এখানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আধুনিক ডিসি পার্ক করার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
পার্কের জন্য জেলা প্রশাসন মোট ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার ইজিপির মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রকৃয়ায় দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এই কর্মসূচিতে বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদগুলো রোপণ করা হবে বলে ডিসি জানান।
নগরীতে যানজট নিরসনে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। যানজটের অন্যতম কারণ অবৈধ অটোরিকশা। ৪০ হাজার অটোরিকশা শহরে চলছে। যা শহরের তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত। এসব অটোরিকশা চালকদের অন্যত্র কর্মসংস্থান করে এবং বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা গ্রহন করে আমরা হার্ডলাইনে যাবো। প্রাথমিকভাবে কমিয়ে এনে ৭ হাজার অটোরিকশা নির্দিষ্ট আইডি কার্ড ও ড্রেসের মাধ্যমে শহরে চলাচল করবে।
মহাসড়কে কুমিল্লা অংশে প্রায় ১২ টি ছোট বড় বাজার রয়েছে। এসব স্থানে যানজট লেগে থাকে। মহাসড়কে ঈদ উপলক্ষে যানজট নিরসনে ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছে, সেনাবাহিনী কাজ করেছে। যানজটমুক্ত ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করা গেছে। আসন্ন ঈদ উল আজহায়ও যানজটমুক্ত মহাসড়ক নিশ্চিত করকে পারবো।
জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার আরো বলেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সর্বদা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। জনগনের কাছে তিনি সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া, দৈনিক কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়, প্রেক্লাবের সভাপতি এনামুল হক ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান সহ কুমিল্লায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।