পাচারের
অর্থ পুনরুদ্ধারে দেশে ও বিদেশে থাকা বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর ৬৬ হাজার ১৪৬
কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ‘সংযুক্ত বা অবরুদ্ধ’ করার খবর দিয়েছে
সরকার।
এর মধ্যে দেশে ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকার এবং বিদেশে ১০ হাজার ৫০৮
কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে বুধবার এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
তবে কোন কোন দেশে কার কার কত সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য সেখানে দেওয়া হয়নি।
এদিন
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা এবং
নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় সমন্বয় কমিটির ৩০তম সভা হয়। অর্থ
উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ তাতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বিদেশে পাচার করা
অর্থ ও সম্পদ উদ্ধার কার্যক্রম ‘অধিকতর দক্ষ ও কার্যকর’ করার লক্ষ্যে
বিদ্যমান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের কিছু ধারা যুগোপযোগী করে সংশোধনের
সিদ্ধান্ত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদ
উদ্ধারের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত ১১টি ‘কেইসের’ জন্য গঠিত যৌথ
অনুসন্ধান ও তদন্ত দলের কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা
হয়।
“উল্লিখিত অগ্রাধিকার কেইসের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ১০৪টি মামলা দায়ের
করা হয়েছে, ১৪টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং আদালত চারটি মামলায়
রায় প্রদান করা হয়েছে।"
অগ্রাধিকারের ১১টি ‘কেইসের’ জন্য মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ২১টি দেশে নথি পাঠানোর কথাও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এসব
ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব অভিযোগপত্র দাখিল, সংশ্লিষ্ট দেশে নথি পাঠানো এবং
মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সভায় সংশ্লিষ্ট
সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ
মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, "একটা কথা বলি, বিদেশ থেকে অর্থ আনতে মিনিমাম চার
থেকে পাঁচ বছর লাগে। এটা এমনি হয় না। এটা একটা ফ্যাক্ট।
“তবে উই মে বি
লাকি, লন্ডন থেকে যদি মামলা, সাইফুজ্জামানের (সাবেক ভূমিমন্ত্রী
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ) মামলাটা যদি রিজলভ হয়ে যায়, ওটা তো তারা
কন্টেস্ট করে নাই। প্রথম মামলায় তো তারা হেরেই গেছে। সেখানে আমাদেরতো
ইসলামী ব্যাংক এবং ইউসিবিএল ক্লেইম বসিয়েছে। ওই ক্লেইমের হয়ত কিছু টাকা
আসতেও পারে।”
তবে সেটি কবে আসবে, তা অনিশ্চিত জানিয়ে গভর্নর বলেন, “বাট
সেটা কবে আসবে, ফেব্রুয়ারির আগে আসবে বা এপ্রিল, জুন, জুলাই, অগাস্টে আসবে
আমরা তো সেটা জানি না।”
এর আগে দুদকের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে লন্ডনে
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সম্পদ জব্দের কথা জানিয়েছিল যুক্তরাজ্যের
ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
অন্যদের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের
চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, অর্থ সচিব, আর্থিক
প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
সচিব (দ্বিপাক্ষিক), অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, সিআইডি প্রধান বুধবারের
সভায় উপস্থিত ছিলেন।
