কুমিল্লার
বরুড়া উপজেলার মগবাড়ি সংলগ্ন কুমিল্লা - চাঁদপুর সড়কের পাশে দেশে
প্রথমবারের মতো স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি বিপণন ডিপোর কার্যক্রম শুরু হলো।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে নির্মিত এ- ডিপোর ১৭
ডিসেম্বর বুধবার সকালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন
করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ( সচিব) মো: আমিনুল
আহসান।
কুমিল্লা শহর থেকে ১৬ কি.মি. দূরে লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে দেশের
প্রথম অটোমেটেড পেট্রোলিয়াম ডিপোর যাত্রা আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়েছে।
বিপিসি
সূত্র জানিয়েছে, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল
পরিবহন’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ডিপোতে
জ্বালানি তেল গ্রহণ থেকে বিতরণ পর্যন্ত সব কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়
পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক পিএলসি
(প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোলার) প্রযুক্তি, ফলে হাতের স্পর্শ ছাড়াই তেল
সরবরাহ সম্ভব হবে।
চট্টগ্রামের প্রধান স্থাপনা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে
জ্বালানি গ্রহণ করবে কুমিল্লা অটোমেটেড পেট্রোলিয়াম ডিপো। এখান থেকে
কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। এতে
সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবহনজনিত ঝুঁকি ও তেল চুরি কমবে বলে আশা
করা হচ্ছে।
চট্রগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা,চাঁদপুর,মুন্সিগন্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে এই পাইপলাইনটি স্থাপিত হয়েছে।
ডিপোটিতে
বিপিসির তিন বিপণন সংস্থা পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল পিএলসি পৃথকভাবে
ডিজেল, পেট্রল ও অকটেন সরবরাহ করবে। প্রকল্পটি পদ্মা অয়েল পিএলসি'র পক্ষে
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করেছেন।
বাংলাদেশের প্রথম সম্পূর্ণ
স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি তেলের ডিপোটিতে ১৯ হাজার ৩শত মেট্রিক টন ডিজেল, ১৫শত
মেট্রিক টন পেট্রোল এবং ১৫ শত মেট্রিক টন অকটেন মজুত করা যাবে। এগুলো
পরিচালনায় থাকবে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বিপণন কোম্পানিগুলো।
এখানে, তেল
বিপণের জন্য ১২টি লোডিং বে সম্পন্ন ফিলিং পয়েন্ট, ১টি প্রশাসনিক ভবন। ১টি
কন্ট্রোল বিল্ডিং, ১টি ৫শত কেভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন সাব-স্টেশন,৪০ কিলো ওয়াট
ক্ষমতার সৌর বিদুৎ প্যানেল ও নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহের জন্য ৫শত কেডি
ক্ষমতা সম্পন্ন একটি জেনারেটর।
পদ্মা অয়েল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক
মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল ইসলাম খাঁন, যুগ্ন সচিব ডা. একেএম আজাদুর
রহমান, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোঃ রেজা হাসান, কর্ণেল মোহাম্মদ সুলতান
মাহমুদ শ্যামল ও বিভাগীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,
এড. মোস্তাক আহম্মেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড এর কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার
জেনারেল আরিফুল ইসলাম খাঁন বলেন, দেশের আধুনিকায়নে স্বাক্ষী হতে পেরেছি,
দ্বিতীয়ত এই স্বাক্ষী হবার যে পরিক্রম তাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে
চট্টগ্রাম - ঢাকা পাইপলাইনের মাঝখানে কুমিল্লা ডিপোতে অংশগ্রহণ করতে পেরে
আমরা অত্যন্ত গর্বিত। এজন্য বিপিসির চেয়ারম্যান স্যারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি,
আমাদের উপর বিশ্বাস রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এতো বড় একটি কাজ
সম্পন্ন করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের
চেয়ারম্যান ( সচিব) মো: আমিনুল আহসান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন আজ
বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের দিন। একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করে
দেশে প্রথম অটোমেটেড একটি ডিপো স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। সারা পৃথিবীর সাথে
তাল মিলিয়ে একটি বিশাল কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে ডিপো করা হয়েছে। ভৌগোলিক ভাবে
কুমিল্লা একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা, তাই এই সুন্দর জায়গায় এটা করা হয়েছে।
