
চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আবাসিক এলাকায় স্থাপিত অনুমোদনহীন ডিজেল
চালিত স’মিল এর শব্দ ও বায়ু দূষণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। ক্ষুব্দ এলাকাবাসীর
পক্ষে এক ব্যক্তি পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের বেশ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত
অভিযোগ দিয়েছে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে উল্টো স’মিল পরিচালক ওই ব্যক্তির বাড়ির
সামনে আরো একটি ডিজেল চালিত স’মিল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। অভিযোগ
প্রাপ্তির তথ্যটি বুধবার নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা হাসিব আহমেদ
চৌধুরী বিভিন্ন দপ্তরে দাখিলকৃত অভিযোগে উল্লেখ করেন, উপজেলার
বাতিসা-উল্লাপাড়া সড়কের পাশে বাতিসা গ্রামে তাঁর ঘর সংলগ্ন ডিজেল চালিত
খোকন টিম্বার এন্ড স’মিল স্থাপন করা হয়েছে। ডিজেল চালিত মেশিনের উচ্চশব্দ,
কালো ধোঁয়া ও কাঠের সুরকিতে পরিবেশ হয়ে পড়েছে বসবাস অযোগ্য। প্রচন্ড শব্দে
অতিষ্ঠ আশপাশের বাসিন্দারা মৌখিকভাবে দফায় দফায় স’মিল আবাসিক এলাকা থেকে
স্থান পরিবর্তন করতে বলেন। ওই স’মিল এর পরিচালক আবুল কাশেমউল্টো হাসিব
চৌধুরীর ঘরের সামনে আরেকটি স’মিল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
বুধবার
দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, হাসিব চৌধুরীরবাড়ির সামনে ডিজেল
চালিত খোকন টিম্বার এন্ড স’মিল এর বিকট শব্দে প্রকম্পিত চারপাশ। কাঠের
সুরকি উড়ছে চারপাশে, সাথে কালো ধোঁয়ায় ধূসর চারপাশের পরিবেশ।
বার্ষিক
পরীক্ষা শেষে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বাতিসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থী রাইসুল আশিক ও রহমান বলেন, প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময়
এই দিক কালো ধোঁয়ার দুর্গন্ধ ও কাঠের সুরকি থেকে বাঁচতে নাক চেপে ধরে
হাঁটতে হয়।
পাশ্ববর্তী বাড়ির জিয়াউদ্দিন মাসুদ বলেন, এদেরকে বারবার
নিষেধ করার পরেও কারো কথা কর্ণপাত করে না। লোকমারফত জানতে পারলাম তাদের
পরিবেশ ছাড়পত্র নেই, অনুমোদন ছাড়াই জোরপূর্বক এই জায়গায় স’মিল স্থাপন
করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স’মিল এর পাশের এক দোকানদার বলেন, আ’'লীগ
সরকারের আমলে জোরপূর্বক এখানে ডিজেল চালিত শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে এই জায়গায়
স’মিল স্থাপন করে। এর আওয়াজে আমরা অতিষ্ঠ। জনবসতি এলাকা থেকে স’মিলটি
স্থানান্তরের জন্য বার বার মালিকপক্ষকে অনুরোধ করলেও শোনেনি।
অভিযোগকারী
হাসিব চৌধুরী বলেন, ‘পরিবার নিয়ে বসবাস করি। আমাদেরকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে
এখানে অনুমোদন ছাড়া উচ্চ শব্দ করা ডিজেল চালিত ইঞ্জিন দিয়ে স'মিল স্থাপন
করা হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে দ্রুত এই অবৈধ স'মিল উচ্ছেদের অনুরোধ
জানাচ্ছি’।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে খোকন টিম্বার এন্ড স’মিল এর
মালিক মোঃ খোকনকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে বুধবার কয়েকবার কল করলেও তিনি
রিসিভ করেননি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ শাহিন আলম বলেন,
‘খোকন টিম্বার এন্ড স’মিল এর কোনো অনুমোদন নাই। গত মাসে কাগজপত্র দেখার
জন্য অভিযানে গেলে মালিক খোকন দরজা জানালা বন্ধ করে পালিয়ে যায়’।
কুমিল্লা
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোছাব্বর হোসেন রাজিব বলেন,
‘চৌদ্দগ্রামের বাতিসায় খোকন টিম্বার এন্ড স’মিল নামে কোন প্রতিষ্ঠানকে
পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
