নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী হত্যা
মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আরো পাঁচ আসামীকে
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ
৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত
আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রাম থানার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে
জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে
জুয়েল। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা
গ্রামের ক্বারী ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ ও ফেলনা
গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির
আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালত
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে
জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও
ভাংচুর চালায়। এতে বাধা দিলে তারা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করে।
একপর্যায়ে তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন
তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
পরদিন ২৩ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহতের পিতা
দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২০-২৫ জনের
বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের
২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট
জেলা ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায়
চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ
শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক
সাবরিনা নার্গিস দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড প্রদান করেন। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক
বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ জন
আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন-
অ্যাডভোকেট মুমিনুল হক ভূঁইয়া। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ
রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
মামলার বাদী দেলোয়ার
হোসেন বলেন, পলাতক আসামিরা এখনো আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি
চাই তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক এবং আদালতের রায় দ্রুত
বাস্তবায়ন করা হোক।
