ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের ভুয়া কাগজে পাসপোর্ট করতে এসে এক
রোহিঙ্গা কিশোরী ধরা পড়েছে। তাকে সহযোগিতার অভিযোগে এক যুবককেও আটক করা
হয়েছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এ
ঘটনা ঘটে।
আটক কিশোরীর নাম হাজেরা বেগম (১৭)। তিনি কক্সবাজারের একটি
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা এবং মুক্তার আহমদের মেয়ে। অন্যদিকে ভাই পরিচয়ে
আটক হওয়া যুবক ইমন মিয়া (১৮) জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুরা গ্রামের ফুল
মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, পাসপোর্ট করতে হাজেরা বেগমকে সরাইল উপজেলার
কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের সুফিয়া আক্তার পরিচয়ে দাখিল করা হয়
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। জন্মনিবন্ধনও দেখানো হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন
কর্তৃক ইস্যুকৃত। তবে কাগজে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেখানো হয়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, দুপুরে
তাদের কাগজপত্র হাতে পেয়ে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা অসঙ্গতি লক্ষ্য
করেন। বিশেষ করে ১৮ বছরের নিচে তরুণী হওয়ায় তাকে অভিভাবক সঙ্গে আনার কথা
জানানো হলে হাজেরা বেগমের কথাবার্তায় অসংলগ্ন আচরণ দেখা যায়। এ কারণেই তাকে
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলাদা করা হয়। কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর মেয়েটি নিজের
প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করে। সে জানায়, সে রোহিঙ্গা হাজেরা বেগম— কক্সবাজার
ক্যাম্প থেকে এসেছে। একটি প্রতারক চক্র তাকে বাংলাদেশের পরিচয় তৈরি করে
পাসপোর্ট করে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। এর কিছুক্ষণ পর ‘ভাই’ পরিচয়ে ইমন মিয়া
অফিসে হাজির হলে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তার কথাবার্তা ও
হাজেরা বেগমের সঙ্গে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় পাসপোর্ট তৈরির
কাজে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সে
রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করে। পরে ‘ভাই’ পরিচয়ে আসা যুবককেও আটক করে দুজনকেই
পুলিশে সোপর্দ করেছি। পাসপোর্ট অফিসে সার্বক্ষণিকভাবে নথিপত্র যাচাই করে
কাজ করা হয়। কোনোভাবেই রোহিঙ্গা বা অসাধু চক্রের সুযোগ নেই এই অফিসে।
এ
ব্যাপারে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম
বলেন, ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে গিয়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরীসহ দুজনকে আটক
করেছে পুলিশ। তদের ব্যাপারে সিনিয়র অফিসারদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।
