ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দুর্গোৎসবে মদপানে মৃত্যুর ৩৮দিন
মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর মদ্যপানে নিহত বৃদ্ধ শ্রী নিবাস
মালাকারের ছেলে এডভোকেট রঞ্জিত মালাকার বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজনের নাম
উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭/৮জনকে আসামী করা হয়। ঘটনার ৩৮দিন পর মামলা হওয়ায়
সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর
উপজেলার মির্জাপুরে দুর্গোৎসবের দশমীর দিনে কয়েকজন মিলে মদ পান করে। এসময়
৫জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দুই দিনপর
(৪ অক্টোবর) শনিবার চিকিৎসারত অবস্থায় শ্রী নিবাস মালাকার (৬৫) ও সৌরভ দাস
(১৭) নামে দুইজনের মৃত্যু হয়। মরদেহ ময়নাতদন্ত না করার জন্য স্থানীয়
নেতৃবৃন্দ নিয়ে পুলিশের নিকট লিখিত আবেদন দেয়। কেউ দায়ী নয় মর্মে প্রশাসন ও
থানায় লিখিত দেয় নিহতের পরিবারবর্গ। অঙ্গীকারনামা দেয়ার পর ময়নাতদন্ত ছাড়া
মরদেহের শেষকৃত্যের অনুমতি দেয় প্রশাসন।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়,
শারদীয় দুর্গোৎসবের দশমীর দিনে মদ্যপানে ৫জন অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ
ঘটনায় একই গ্রামের বাসিন্দা রিপন মালাকার ও তার মা অর্চনা মালাকার এবং
সুজিত সরকার ফুসলিয়ে নিহত ও অসুস্থদেরকে মদ খাওয়ানো হয়েছে এজহারে উল্লেখ
করা হয়। এতে করে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু ও অসুস্থ হয় বাদীর স্বজনরা।
নিহত
শ্রী নিবাস মালাকারের ছেলে এডভোকেট রঞ্জিত মালাকার বাদী হয়ে মদপানে সৌরভ
দাসের বিষয়টি মামলায় উল্লেখ করেন। কিন্তু নিজ পিতার মৃত্যুর বিষয়টি এড়িয়ে
সৌরভ দাসের মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করেন মামলায়।
নিহত সৌরভ দাসের কাকা
বাবুল দাস বলেন, দুর্গোৎসবে মদ্যপানে দুইজন মারা গেছে সবাই জানে। পরিবারের
পক্ষ থেকে লিখিত দিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছি। আমরা কাউকে
দায়ী করেনি। নিহত শ্রী নিবাস মালাকারের ছেলে এডভোকেট রঞ্জিত যে মামলা করেছে
এখানে আমাদের কোন মতামত ছিল না। আমরা মামলা সম্পর্কে অবগত নয়।
মামলার
বাদী এডভোকেট রঞ্জিত মালাকার বলেন, আসামীরা ঘটনার দিন ফুসলিয়ে মদ খাওয়ান।
এতে করে অসুস্থ হয়ে মারা যান সৌরভ। তবে তার পিতা শ্রী নিবাস মালাকার মদ
খেয়ে মারা গেছেন বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তার দাবি শ্রী নিবাস মালাকার
অসুস্থতা জনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন। এডভোকেট রঞ্জিত মালাকার বিজয়নগর
থানায় তার পিতার অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে তার
পিতা অসুস্থতাজনিত ও মদপানে মৃত্যু হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামী রিপন
মালাকার (২৭) বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী কার্যালয়ে আউট সোর্সিং-এ
নিরাপত্তা প্রহরী পদে কর্মরত। রিপন জানায়, ঘটনার দিন রাতে উপজেলায় ডিউটিতে
ছিলাম। আমি ও আমার বৃদ্ধ মা অর্চনা মালাকার (৫৫)কে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা
হয়রানি করার জন্য মামলা দেয়া হয়েছে। বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
শহীদুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি
তদন্তাধীন রয়েছে।
