ইনকাম
ট্যাক্স আইন, ২০২৩–এর ধারা ৩২৭(৩) কেন সংবিধানের সঙ্গে এবং কেন বার
কাউন্সিল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন
হাইকোর্ট। রুলে বার কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত আইনজীবী ছাড়া অন্যদের কর আইনজীবী
হিসেবে স্বীকৃতি কেন অবৈধ হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
এ
সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিচারপতি
ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ
এসব রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তানভীর
আহমেদ, রাফসান আলভী, জুয়েল আজাদ, রুহুল আমিন, রইছ উদ্দিন, বিপ্লব কুমার
পোদ্দার প্রমুখ।
পরে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘আইনজীবীদের অধিকার,
আত্মমর্যাদা ও পেশাগত সম্মান রক্ষার্থে আমরা একদল তরুণ আইনজীবী মিলে ইনকাম
ট্যাক্স আইন, ২০২৩–এর একটি বিতর্কিত ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করি।
রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে রুল জারি করেছেন।’
রুলে
জানতে চাওয়া হয়েছে—ইনকাম ট্যাক্স আইন, ২০২৩–এর ধারা ৩২৭(৩) কেন সংবিধানের
সঙ্গে এবং কেন বার কাউন্সিল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। ধারা ৩২৭(৩)-এ ‘কর
আইনজীবী’ বলতে বার কাউন্সিল সনদপ্রাপ্ত আইনজীবী ছাড়াও যেসব ব্যক্তিদেরকে কর
আইনজীবী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে তারা হলেন- ১. অনুশীলনকারী চার্টার্ড
অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ২. অনুশীলনকারী কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট
অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ৩. অনুশীলনকারী চার্টার্ড সেক্রেটারি, ৪. বোট কর আইনজীবী
হিসেবে সনদপ্রাপ্ত ব্যক্তি। এসব বিধান সরাসরি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইন
এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কারণ, বাংলাদেশে আইন পেশায় সনদ দেওয়ার
একমাত্র আইনগত কর্তৃপক্ষ হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এবং বার কাউন্সিল আইনেই
আইনজীবী শব্দের সংজ্ঞা নির্ধারিত। কিন্তু ইনকাম ট্যাক্স আইন, ২০২৩–এ কর
আইনজীবী নামে আইনজীবী ব্যতীত অন্যান্য পেশাজীবীদের সনদ দেওয়ার মাধ্যমে
আইনজীবী পেশার একচ্ছত্র আইনগত কাঠামোকে দুর্বল করা হয়েছে, যা সংবিধানের ২২,
৩১, ৪০ ও ১০২ অনুচ্ছেদের আলোকে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে।
বাংলাদেশ
বার কাউন্সিল, যারা দেশের আইনজীবীদের অভিভাবক তারা আইনটি প্রণয়নের পূর্বে
যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা আশা করি, রুলের চূড়ান্ত শুনানির
আগে বা শুনানির সময় তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আইনজীবীদের অধিকার
রক্ষায় তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
