কুমিল্লার
মেঘনা উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি করতে গিয়ে সরাসরি ঘুষের
দাবির মুখে পড়েছেন নাছির উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী। কয়েকদিন ধরে অফিসে
ঘুরেও কোনো সমাধান না পেয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত অফিস সহায়ক নাজমা আক্তারের
সঙ্গে কথা বলেন। এ সময়ই শুরু হয় ঘুষের টাকার দর-কষাকষি। এমন একটি ভিডিও
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ২.৪৫ দুই মিনিট পাঁচ চল্লিশ
সেকেন্ডের ভিডিও দেখা যায় অফিস সহকারী নাজমা আক্তার দুই হাজার টাকা দাবি
করেন এসময় ভুক্তভোগীকে বলেন, “আপা পনের শত টাকা রাখেন।” কিন্তু নাজমা
আক্তার দৃঢ় কণ্ঠে তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “না, দুই হাজার টাকাই দিতে
হবে। স্যারের গাড়িভাড়া আছে, খরচ আছে।” এই বলে নাজমা আক্তার ভুক্তভোগীর কাছ
থেকে ২ হাজার টাকা গ্রহণ করে টাকাগুলো তার নিজের ড্রয়ারে রেখে দিচ্ছেন।
সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “২ হাজার টাকা দেন, এখনই প্রস্তাব দিয়ে দিব।”
ভুক্তভোগী টাকাটি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হাতে দিতে চেয়েছিল কিন্তু
নাজমা বাধা দিয়ে তিনি তার কাছেই রেখে দিলেন। এরপর ভুক্তভোগীকে স্যারের
কক্ষে পরে প্রবেশ করার কথাও বলেন তিনি।
ভিডিওতে বারবার যে ‘স্যার’-এর
কথা উল্লেখ করা হচ্ছে, তিনি চন্দনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি
কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি চন্দনপুর ও
রামপুর বাজারের বড়কান্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
এ
বিষয়ে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী আক্তার বলেন,
“বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও ওই ভূমি কর্মকর্তার
বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগসহ আরও কিছু তথ্য আমার কাছে আছে। তিনি বেশিরভাগ
সময় অফিসে থাকেন না, অসুস্থতার কথা বলেন। সব মিলিয়ে তাঁকে এই অফিস থেকে
সরিয়ে দেওয়ার জন্য আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাকে যথাযথ
ব্যবস্থা নিবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।”
অভিযুক্ত অফিস সহায়ক নাজমা আক্তারের
বক্তব্য জানতে মুঠফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায়
বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গোপন ভিডিও প্রকাশের পর চন্দনপুর এলাকায়
তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতে
সরকারের নানা উদ্যোগের পরও ভূমি অফিসে কেন এখনো ঘুষের এ প্রকাশ্য দর-কষাকষি
চলছে?
