নারায়ণগঞ্জ
শহরের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামের এক নৈশপ্রহরীকে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যার
ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর)
দুপুরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা
যায়, শহরের খানপুর জোড়া পানির ট্যাংকির ভেতরে ৬ জন যুবক মিলে নৈশপ্রহরী
আবু হানিফকে ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি আঘাত করছে। এ
সময় সেখানে ছোট একটি শিশু দাঁড়ানো ছিল। আবু হানিফ অনেক কাকুতি-মিনতি করেও
তাদের হাত থেকে রক্ষা পাননি। মুঠোফোনে ধারণ করা ওই ভিডিওটি সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত আবু হানিফ বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার
আবুল কালামের ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। তিনি খানপুর জিতু ভিলায়
নৈশপ্রহরীর কাজ করতেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গত ২০ অক্টোবর দুপুরে
এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ এনে নৈশপ্রহরী আবু হানিফকে তার বাসা থেকে
তুলে খানপুর জোড়া ট্যাংকির ভেতরে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ৫-৭ জন যুবক ইট
দিয়ে একের পর এক আঘাত করে থেঁতলে দেয়। এ সময় আবু হানিফ অনেক কাকুতি-মিনতি
করলেও রেহাই পায়নি। একের পর এক ইটের আঘাতে আবু হানিফ অচেতন হয়ে পড়লে ওই
যুবকরা তাকে ফেলে চলে যায়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ৩০০
শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওইদিন রাত ৯টার দিকে
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ
তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- বাহার (৩৬), সাইদুল ইসলাম
(২৫) ও মুশফিকুর রহমান (২৯)।
নিহতের ভগ্নিপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘ওই
দিন দুপুরে তার শ্যালক আবু হানিফকে বাসা থেকে কয়েকজন যুবক মারতে মারতে
তুলে নিয়ে যায়। তারা খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা
করেন।’ তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
জানান।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মোহাম্মদ
হাসিনুজ্জামান বলেন, ‘নৈশপ্রহরী হানিফকে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যার ঘটনার একটি
ভিডিও পাওয়া গেছে। ওই ভিডিও পর্যালোচনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে
গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায়
নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিশুকে মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া এলাকা থেকে অপু (২৫) নামের
এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তার অপু শহরের খানপুর এলাকার
হারা মিয়ার ছেলে। তিনি মামলার ৯ নম্বর আসামি।