স্যোসাল
মিডিয়ায় টাইফয়েড টিকা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছেন একটি মহল । সেকারনে কিছু কিছু
অভিভাবক তাদের শিশু সন্তানদের এই টিকা দিতে অনিহা দেখাচ্ছেন। তারপরও গত ৯
কর্ম দিবসে (২২ অক্টোবর পর্যন্ত) কুমিল্লার লালমাইয়ে ২৮ হাজার ৬৩৪জন শিশুকে
টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়,
গত ১২ অক্টোবর থেকে উপজেলার ২৭০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে টিকা
দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই ক্যাম্পেইন চলবে। শিশুদের
নির্বিঘ্নে টিকা দিতে ৫৪জন টিকা কর্মী (স্বাস্থ্য সহকারি, পরিবার কল্যাণ
সহকারি, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক) ও ২৭ জন সুপারভাইজার (এফডব্লিউভি,
স্যাকমো) কাজ করছে।
দ্য গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজের সমীক্ষা অনুযায়ী,
২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ ৭৮ হাজার রোগী আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে
মৃত্যু হয় আট হাজার। যার ৬৮ শতাংশই শিশু। শিশুদের মধ্যে টাইফয়েড আক্রান্তের
হার বেশি।
লালমাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এনামুল হক বলেন,
ছুটির দিন ব্যতিত গত ১২ অক্টোবর থেকে নিয়মিতভাবে শিশুদের টাইফয়েড টিকা
দেওয়া হচ্ছে। টিকা গ্রহণের কারনে কোন শিশু অসুস্থ হয়নি বা সামান্য জ্বরও
আসেনি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের বেশিরভাগ টিকা গ্রহণ করছে। তবে
অভিভাবকদের অসচেতনতা বা অনিহার কারনে কওমি ও প্রাইভেট মাদরাসার কিছু শিশু
টিকা নিচ্ছে না। তারপরও টাইফয়েড টিকা প্রদানে জেলায় আমরা ভালো অবস্থানে
রয়েছি। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুরাই
টাইফয়েড জ্বরে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় প্রচলিত
যেসব এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হয় তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বর্তমান টাইফয়েড
নিরাময়ে কাজ করছে না। ফলে ভয়াবহ ওষুধ প্রতিরোধী টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপ দিন
দিন বাড়ছে। টাইফয়েড টিকা গ্রহণ করলে এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার হার বহুলাংশে
হ্রাস পাবে। ফলে এন্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগ কমে আসবে।
টিসিবি ক্যাম্পেইন
বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) হিমাদ্রী
খীসা বলেন, দূষিত পানি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং খাবারের মাধ্যমে
টাইফয়েড ছড়িয়ে থাকে। শিশুদের টাইফয়েড থেকে রক্ষা করতে হলে টিকা দেওয়া খুবই
জরুরি। টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হলে বাচ্চারা কমপক্ষে পাঁচ বছর পর্যন্ত
টাইফয়েডের জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।