কুমিল্লার
চান্দিনায় প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নিম্নমানের সামগ্রীতে নির্মাণাধীন সেই
সড়কে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ৬.২৫ কিলোমিটার সড়ক পাঁচ মাসেও সংস্কার কাজ
সম্পন্ন থাক দূরের কথা এখনও কার্পেটিং করার পর্যায়েই যেতে পারেনি ঠিকাদার
প্রতিষ্ঠানটি। উপরন্তু চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন এবং
সড়ক জুড়ে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উপজেলার
কুটুম্বপুর বাস স্টেশন থেকে কেশেরা পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার কাজ পায় ওমর
ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু থেকেই
নানা অনিয়মের চিত্র ভেসে উঠে স্থানীয়দের কাছে। নিম্নমানের ইটের সাথে মাটি
মিশিয়ে ম্যাকাডাম করায় ক্ষোভে ফুসে উঠে ছিল এলাকাবাসী। সড়কটি সংস্কারের ওই
অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয় কুমিল্লা কাগজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ওই সংবাদের
ভিত্তিতে সরেজমিন তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে অবশেষে প্রায়
দুইশ মিটার সড়কের ম্যাকাডাম তুলে নেয়া হয়।
চলতি বর্ষা মৌসুমে ওই
সড়কটির পরচঙ্গা বাজার সংলগ্ন ফকির বাড়ির সামনে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সোল্ডার
ছাড়া ১২ফুট প্রস্থের ওই সড়কের প্রায় ৮ ফুট রাস্তা ভেঙ্গে গর্তে পড়ে গেছে।
যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে সেই সাথে অন্তত ৮টি গ্রামের
বাসিন্দারা পড়েছেন বিপাকে। এছাড়া সড়ক জুড়ে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকটি স্থানে বাঁশের খুঁটিতে কাপড় বেঁধে সতর্ক করা হচ্ছে যান চালকদের।
স্থানীয়
বাসিন্দা রতন মিয়া জানান- সড়কটির কিনারায় (সোল্ডার) মাটি সড়কের গোড়া থেকে
কেটে উঠানোর কারণে এবং বাড়ির পানি নামার কারণে সড়কটি ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গাটি
যখন ছোট ছিল তখনও আমরা ঠিকাদারের লোকজনদের কয়েকবার বলেছি, কিন্তু তারা
আমাদের কথা কানে নেয় নাই।
নাজমূল নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান-
ঠিকাদার তার মনমতো কাজ করছে। কয়েকদিন কাজ করে আবার কয়েক সপ্তাহ কাজ বন্ধ
রাখে। তার কাজের গাফিলতিতে সড়কটির এ বেহাল অবস্থা।
ওই সড়কে চালাচলরত
ইউসুফ নামের এক সিএনজি চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- সড়কটির সংস্কার কাজ
শুরু করার আগেই ভাল ছিল। আজ ৪-৫ মাস যাবৎ চরম ভোগান্তি হচ্ছে। কুটুম্বপুর
এক কালভার্ট ভেঙ্গে পাশে যে ডাইভারশন করা হয়েছে সে জায়গা দিয়ে যানবাহন
চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ওমর ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী জালাল
উদ্দিন কালা জানান- বৃষ্টির কারণে ঠিকমতো কাজ করা যাচ্ছে না। আর যে জায়গাতে
ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে সড়কের পাশের বাড়িগুলো থেকে বৃষ্টির পানি নেমে এ ঘটনা
ঘটেছে। বৃষ্টি কমলে রাস্তার পাশে ড্রাম দিয়ে মেরামত করবো।
স্থানীয়রা
আপনাকে শুরুতেই মেরামত করার জন্য অনুরোধ করেছিল এমন প্রশ্ন করতেই ক্ষুব্ধ
হয়ে ঠিকাদার জালাল উদ্দিন বলেন- ‘এদেশে কি কোন মানুষ আছে নাকি ? জনগণ কি
কিছু বুঝে নাকি। তাদের জন্য স্বর্ণ দিয়ে রাস্তা বানাবো ?’
এ ব্যাপারে
চান্দিনা উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান- সড়কটির ভাঙ্গন
দ্রুত মেরামত করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি কমলে সড়কের কাজ
শুরু করতেও বলা হয়েছে।