বঙ্গোপসাগরে
মাছ শিকার করতে গিয়ে বরগুনার সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের এফবি ভাই
ভাই ও এফবি রফিক নামের দুটি ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
মুখোশধারী
অন্তত ২৫-৩০ জন ডাকাতের হামলায় দুই ট্রলারে থাকা আট জেলে আহত হন। এদের
মধ্যে কামাল হোসেন (৩২) নামের এক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্রলারগুলোতে থাকা
প্রায় ২০ লাখ টাকার মূল্যের জাল, মাছ ও জেলেদের ব্যবহৃত প্রায় ৩০টি মোবাইল
ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে
বঙ্গোপসাগরের সোনার চর সংলগ্ন বাইজবার বয়া এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে
শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে আহত জেলেসহ ট্রলার দুটি বরগুনার নলী বাজার সংলগ্ন
চড়কগাছীয়া ঘাটে পৌঁছায়।
গুলিবিদ্ধ আহত জেলে কামাল হোসেন ওই এলাকার বাসিন্দা ইউনুস পহল্লানের ছেলে।
স্থানীয়
ও ট্রালার মালিক সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে ৩৫ জন জেলেসহ ট্রলার দুটি
সাগরে যায়। শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরের সোনার চরের বাইজবার বয়া এলাকায়
ডাকাতদল অতর্কিতে ট্রলার দুটিতে হামলা চালায়। এসময় অস্ত্রসহ ২৫-৩০ জন
মুখোশধারী ডাকাত একে একে দুটি ট্রলারে ডাকাতি করে।
এসময় ডাকাতদের ছোড়া
গুলিতে একজন আহত হন। ৭-৮ জনকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত করা হয়।
পরে ট্রলারে থাকা জাল, মাছ, জ্বালানি তেলসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল
নিয়ে যায় ডাাকতরা।
পরে দুটি ট্রলারই চালিয়ে সদর উপজেলার নলী বন্দর
এলাকায় আনা হয়। সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ কামাল হোসেনকে বরগুনা জেনারেল
হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক।
এ বিষয়ে ভাই ভাই ট্রলারের
মালিক মাসুম হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাতদিন আগে ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ
শিকার করতে যায় জেলেরা। মাছ শিকার শেষে প্রতিবার ঘাটের কাছাকাছি এলে
জেলেরা আমাদেরকে ফোন দেয়। তবে আজ জেলেরা ঘাটে এসে সরাসরি আমার বাড়িতে গিয়ে
জানায়, ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইলসহ ট্রলারের
বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। এ ঘটনায় ১০-১২ লাখ টাকার
ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
আহত জেলে কামাল হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বলেন, ‘আমার
স্বামী পাঁচদিন আগে সাগরে গিয়েছিল। আজ তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে
আনা হয়েছে। এখনো তার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।’
এফবি রফিক নামের ট্রলারটির
মালিক জাহাঙ্গীর মোল্লা। তিনি বলেন, ‘ডাকাতের হামলায় ট্রলারে থাকা ৫-৬ জন
জেলে আহত হয়েছে। এছাড়া ভাঙচুর করাসহ ট্রলারে থাকা মাছ জাল এবং স্টাফদের
মোবাইল নিয়ে গেছে ডাকাতরা। কোনোভাবে জেলেরা ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরে এসেছে।’
এ
বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মোস্তফা কামাল
জাগো নিউজকে বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা মোটামুটি ভালো আছে। তবে তার দুই পায়ে অসংখ্য
পিলেটের চিহ্ন রয়েছে এবং ভেতরে পিলেট ঢুকে আছে। পিলেটগুলো অপসারণ করতে
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
পাঠানো হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো ইয়াকুব হোসাইন
জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের থানা এলাকার মধ্যে যদি এমন ঘটনা ঘটে এবং
সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাই, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।