১৮৩৭
সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা জিলা স্কুল ১৮৯ তম বছরে
পদার্পন করেছে। মাধ্যমিক শিক্ষার বাতিঘর সুপ্রাচীন এই বিদ্যাপীঠের
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে। আনন্দ
শোভাযাত্রা, কেককাটা, আলোচনা সভা ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রোববার কুমিল্লা
জিলা স্কুলের গৌরবের ১৮৮ বছর পূর্তি উৎসব পালিত হয়।
সকাল ১০ টা ৩০ মিনিট
থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠান হয়। দিনটি উপলক্ষে প্রতি ক্লাসে
আলাদাভাবে কেক কাটা হয়। এ উপলক্ষে বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্ররা কালো রঙের
টিশার্ট তৈরি করে। শিক্ষার্থীদের কলধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে প্রায় ছয় একরের
ক্যাম্পাস।
উৎসবে অংশ নেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক সোমেশ কর চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো রফিকুল ইসলাম।
কুমিল্লা
জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো আবদুল হাফিজের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠান হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন প্রভাতী শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক সুদীপ্তা রাণী রায়,
দিবা শাখার প্রধান শিক্ষক মো নুরুল হক।
১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুলাই
কুমিল্লা জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়। তৎকালীন ত্রিপুরা জেলা কালেক্টর অফিস ও
ত্রিপুরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান করণিক হেনরি জর্জ লেইজিস্টার
স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
পরবর্তীতে ব্রিটিশ ভারত সরকার ইংরেজি সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের
লক্ষ্যে স্কুলটিকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের রূপদান করে।
বর্তমানে
প্রভাতী ও দিবা দুই শিফটে ১ হাজার ৯১১ জন ছাত্র আছে। দুই শিফটে শিক্ষক আছেন
৫২ জন। জমির পরিমাণ ৫ দশমিক ৬৯ একর। কুমিল্লা নগরের প্রাণকেন্দ্রে এই
স্কুলের অবস্থান। ধর্মসাগর দিঘির পূর্ব দক্ষিণ কোণে এই স্বনামধন্য
ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলে।
এসএসসিতে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের নাম্বার ওয়ান স্কুল পাসের হার ও জিপিএ ৫
এর গড়ে।
প্রধান শিক্ষক মো আবদুল হাফিজ বলেন, এই স্কুল আমাদের অলংকার ও
অহংকার। এক ঝাঁক মেধাবীদের স্কুল এটি। নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা ও অভিভাবক,
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় ভালো ফল করে আসছে।
দেশের অনেক
খ্যাতনামা ব্যক্তি এখানকার ছাত্র ছিলেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই
স্কুলের ছাত্ররা অংশ নেন। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলনে,
ছয় দফায়, নব্বইয়ের আন্দোলনে, ২৪ এর জুলাই আগস্ট আন্দোলনে এই স্কুলের
ছাত্ররা অংশ নেন। সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিতর্ক, স্কাউট, অলিম্পিয়াডে এই
স্কুলের শিক্ষার্থী দের ভূমিকা উজ্জ্বল।