কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন সোনাকান্দা গ্রামে শতবর্ষী তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুই পাখির বাসা ধ্বংস ও ছানা হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রবিবার (২০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযোগ করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে সোনাকান্দা গ্রামের মসজিদের পাশে ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে একটি শতবর্ষী তালগাছ কেটে ফেলা হয়। তালগাছটি অনেক বছর ধরে বাবুই পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও প্রজননকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। এতে অসংখ্য ঝুলন্ত বাসা, ডিম ও ছানা ছিল। ওই গ্রামের মৃত আবুবকর মোহম্মদ শামসুল হুদার ছেলে মাহমুদুর রহমান গাছটি কাটেন। এতে সহযোগিতা করেন মীর হোসেন ও জাকির হোসেন নামের আরো দুই ব্যক্তি। গাছ কাটার সময় অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা মাটিতে পড়ে ডিম ভেঙে ছানাগুলো মারা যায়।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাবুই পাখির ছানা হত্যা ও ডিম ধ্বংস করার অভিযোগে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। রবিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সোনাকান্দা গ্রামের হাসান আহমদ। তিনি বলেন, শতবর্ষী এই তালগাছটিতে অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা ছিলো। এসব বাসায় ডিম ও ছানা ছিলো। গাছটি কেটে ফেলায় একদিকে যেমন পাখিগুলো নীড়হারা হয়েছে, অপর দিকে প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট ছানা এবং নষ্ট হয়েছে অনেক ডিম। এজন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান শতবর্ষী তালগাছ কাটার বিয়য়টি স্বীকার করে বলেন, মজজিদটি সম্প্রসারণ করার জন্য গাছটি কাটা প্রয়োজন ছিল, তাই কেটেছি।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখব।
কোম্পানীগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে শতবর্ষী তালগাছ কাটার কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে বাবুই পাখির ছানা হত্যা ও ডিম ধ্বংস করার অভিযোগে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, ওয়াকফকৃত জায়গার গাছ কাটতে হলে ওয়াকফ ষ্ট্রেট কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। বাবুই পাখির ছানা হত্যা ও ডিম ধ্বংস করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।