দুজনেই
ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওঠেন উইম্বলডনের ফাইনালে। একজনের ভাণ্ডারে ছিল
পাঁচটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের অভিজ্ঞতা, আরেকজন আসরের চমক। শিরোপার মঞ্চে
এসে নতুন কোনো বিস্ময় উপহার দিতে পারলেন না অ্যামান্ডা অ্যানিসিমোভা।
দাপুটে পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হলেন ইগা
শিয়াওতেক।
সেন্টার কোর্টে শনিবার মেয়েদের এককের ফাইনালে ৬-০, ৬-০ গেমে জিতেছেন পোলিশ তারকা।
টানা
১৮ গেম জিতে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন
শিয়াওতেক। গড়লেন পোল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডন জয়ের অনন্য
কীর্তি। গ্র্যান্ড স্ল্যামে এটি তার শততম জয়, ১২০ ম্যাচে।
২০১৯ সালে
বাবাকে হারিয়ে, যিনি তার কোচও ছেলেন, ভেঙে পড়েছিলেন অ্যানিসিমোভা, থমকে
গিয়েছিল তার ক্যারিয়ার। ২০২৩ সালে আবার মানসিক অবসাদের কারণে টেনিস থেকে
লম্বা বিরতি নেন তিনি। তাতে ডাব্লিউটিএ র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়েন ৪০০ এর
বাইরে। গত বছর কোর্টে ফেরার পর চলতি আসর শুরু করেন ১৩তম বাছাই হিসেবে।
কোর্টে
নেমে একের পর এক চমক দেখিয়ে, সেমি-ফাইনালে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ খেলোয়াড়
আরিনা সাবালেঙ্কাকে হারিয়ে উঠে আসেন শিরোপা লড়াইয়ে। এখানে যদিও তাকে কোনো
লড়াইয়ের সুযোগই দিলেন শিয়াওতেক। মাত্র ৫৭ মিনিটেই উড়িয়ে দিলেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষকে।
এমন অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে টেনিসের
ময়দানে ৩৭ বছর পুরোনো এক স্মৃতিও ফেরালেন ২৪ বছর বয়সী শিয়াওতেক। টেনিসের
উন্মুক্ত যুগে গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার দেখা
গেল ৬-০, ৬-০ স্কোরলাইন।
১৯৮৮ সালের ফরাসি ওপেনের ফাইনালে বেলারুশের
নাতাশা জেভেরেভাকে এভাবেই হারিয়েছিলেন ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী জার্মান
গ্রেট স্টেফি গ্রাফ। সেদিন তিনি জিতেছিলেন মাত্র ৩৪ মিনিটে।
‘ফাইনালে
কখনও হারেন না’, অসামান্য এই ধারাবাহিকতাও ধরে রাখলেন শিয়াওতেক। ছয়বার
গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠে জিতলেন প্রতিবার; এর আগে তিনি জিতেছেন
চারবার ফরাসি ওপেনে ও একবার ইউএস ওপেনে।
এমন অনায়াসে, শিরোপা লড়াইকে এভাবে একপেশে বানিয়ে ফেলে যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না অষ্টম বাছাই হিসেবে আসর শুরু করা শিয়াওতেকের।
“খুবই পরাবাস্তব অনুভূতি হচ্ছে।”
“এমনকি
আমি এর স্বপ্নও দেখিনি, আমার কাছে এটা বাস্তবতার থেকে অনেক দূরের কিছু।
আগের গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলো জিতে আমার নিজেকে একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বলেই মনে
হতো, কিন্তু তারপরও এমন (এভাবে জয়ের) কিছুর প্রত্যাশা কখনও করিনি।”
বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের মাঝে বয়সে এক বছরের ছোট প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানাতেও ভুল করেননি শিয়াওতেক।
“প্রথমত,
চমৎকার এই দুই সপ্তাহ সে যেভাবে খেলেছে, এর জন্য আমি অ্যামান্ডাকে
অভিনন্দন জানাতে চাই। তুমি যেভাবে কাজ করছো, তাতে তোমার গর্বিত হওয়া উচিত
এবং আমি আশা করি, আমরা আরও অনেক ফাইনাল খেলব।”