কুমিল্লায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার।
সভায় জেলার বিভিন্ন দপ্তরের উপস্থাপিত প্রতিবেদনে জুন মাসের অপরাধ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, মে মাসের তুলনায় জুনে কিছু অপরাধ কমলেও কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক বৃদ্ধি ঘটেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন মাসে ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি, যেখানে মে মাসে তিনটি ডাকাতির ঘটনা রেকর্ড করা হয়। হত্যাকাণ্ডও কমে জুনে দাঁড়িয়েছে ৬টিতে, যা মে মাসে ছিল ৯টি।
অপরদিকে, ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে জুনে হয়েছে ১৫টি, যেখানে মে মাসে ছিল ১২টি। নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা কমে জুনে দাঁড়িয়েছে ৩১টিতে, যা মে মাসে ছিল ৪০টি। চাঁদাবাজির ঘটনাও কমে এসেছে—জুনে ১টি, মে মাসে ছিল ৩টি। চুরির ঘটনাও কমে জুনে হয়েছে ১৬টি, যা মে মাসে ছিল ২৫টি।
তবে আহতের সংখ্যা বেড়ে জুনে দাঁড়িয়েছে ১২৭ জন, যা মে মাসে ছিল ১০৬ জন। ছিনতাইয়ের ঘটনা জুনে ছিল ১টি, যেখানে মে মাসে কোনো ঘটনা ঘটেনি। চোরাই যানবাহন চালনার মামলা জুনে ছিল ৬টি, যা মে মাসে ছিল ৩টি।
দুই মাসেই দ্রুত বিচার আইনে কোনো মামলা হয়নি। মাদকের মামলায় জুনে ১৮৪টি মামলা হয়েছে, যেখানে মে মাসে ছিল ১৮৬টি। মে মাসে মোট মামলা ছিল ৪৮৯টি, যা জুনে কমে দাঁড়ায় ৪৭৬টিতে।
সভায় আরও জানানো হয়, জুন মাসে জেলায় ৯টি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে, যা মে মাসের তুলনায় বেশি।
সভায় নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ও সড়ক জনপদ বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, রাষ্ট্র সবকিছুর দায়িত্ব নিলে, সেটা সম্পন্ন করতে পারবে না। কিছু দায়িত্ব ব্যক্তিকেও নিতে হবে। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর দায় দিয়ে বসে থাকলে রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না। সকল নাগরিককে নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিক সচেতনতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কুমিল্লার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করা সম্ভব।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ১০ বিজিবির সিও লেফট্যানেন্ট কর্নেল মীর আলী এজাজ, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান, জেলা পিপি কাইমুল হক রিংকু, মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।