চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের
কক্ষে ঢুকে শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে একদল শিক্ষার্থীর হট্টগোলের ভিডিও
ভাইরাল হয়েছে। সেখানে উপাচার্যকে উদ্দেশ করে আঙুল উঁচিয়ে শিক্ষার্থীদের
বলতে শোনা যায়, ‘স্যার, আপনি নিজের যোগ্যতায় আসেননি, আমরা বসাইছি...’।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এমন কথোপকথন উঠে এসেছে।
খোঁজ
নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ
চক্রবর্তীর পদোন্নতির সাক্ষাৎকার বাতিল এবং চাকরিচ্যুত করার দাবিতে
শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিভিন্ন
রাজনৈতিক এবং সামাজিক দলের নেতাকর্মীরা। এরপর বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্য
কার্যালয়ে যান তারা।
এসময় কুশল বরণ চক্রবর্তীর নিয়োগ বাতিল নিয়ে
প্রশাসনের সঙ্গে হট্টগোল করেন শিক্ষার্থীরা। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়,
উপাচার্য কার্যালয়ে দুজন শিক্ষার্থী এমন কথা বলেছেন। তাদের একজন চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা শাখাওয়াত হোসেন। আরেকজন
শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা ও ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের
শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব।
ভিডিওতে দেখা যায়, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী
তাহসান হাবীব উপাচার্যকে বলছেন, ‘স্যার আপনাকে আমরা উপাচার্য পদে বসিয়েছি।
আপনি আমাদের কথা মানতে বাধ্য।’ এরপর উপাচার্য বলেন, ‘না’ ।
উপাচার্যের
এই কথার সঙ্গে সঙ্গেই নেতাকর্মীরা হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়
শাখা শিবিরের সাবেক নেতা শাখাওয়াত হোসেন উপাচার্যকে বলেন, ‘এখানে আপনি নিজ
যোগ্যতায় বসেননি।’ এরপর তাহসান হাবীব আবারও বলেন, ‘স্যার, আপনাকে আমরা এনে
এখানে বসিয়েছি। আপনি এখানে নিজ যোগ্যতায় বসেননি।’
তখন উপাচার্য বললেন,
‘কী করেছি আমি?’ তাহসান তার উত্তরে বলেন, ‘আপনি কেন ফ্যাসিবাদের দোসরদের
প্রমোশন দিচ্ছেন, আমাদের রক্তের সঙ্গে আমাদের বিপ্লবের সঙ্গে বেইমানি করে।’
এ
বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক শিবির নেতা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি ভেবেচিন্তে
কথাটা বলেনি, ভুলবশত বলে ফেলেছি। সাবধানে কথা বলার উচিত ছিল।’
ইতিহাস
বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব বলেন, ‘আসলে আমি বোঝাতে চেয়েছি জুলাইয়ে
শহীদের রক্তের ওপর এই প্রশাসন এসেছে। উপাচার্যের যোগ্যতা নেই এমনটা আমি
বোঝাতে চায়নি। আমি ভুল বুঝতে পেরে উপাচার্য স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।