প্রকাশ: শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ১০:০৫ পিএম আপডেট: ০৭.০৬.২০২৫ ১০:২৯ পিএম |

সরকারি নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনছে না আড়তদাররা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পানির দামেই চামড়া নিতে পাড়া-মহল্লায় ঘুরছে আড়তদারদের নির্ধারিত লোকজন। ২ লাখ টাকার গরুর চামড়া ৩শ টাকার বেশি দরে কিনছে না তারা। এমন পরিস্থিতিতে গৃহস্থের কাছ থেকে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (৭ জুন) কোরবানির পর থেকেই বাড়ি বাড়ি ছুটে যান মৌসুমী চামড়া ব্যবসাযীরা। কেউবা আবার আগে থেকেই বলে রাখেন যেন তাকেই চামড়াটি দেয়া হয়। দুপুরের পর থেকে রিক্সা ভ্যান যোগে পাড়া মহল্লায় ছুটে চলে চামড়া সংগ্রহ করা মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশানের সরাসরি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ছায়কোট গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ জানান- আমি যে গরুটি কোরবানি দিয়েছে তার দাম ছিল ২ লক্ষ টাকা। কিন্তু ওই গরুর চামড়া মূল্য বলছে ৩শ টাকা। যে কারণে আমি এখনও (সন্ধ্যা ৭টা) বিক্রি করিনি।
তিনি আরও বলেন- সরকার ঢাকার বাহিরে প্রতিটি চামড়া মূল নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ১৫০টাকা। লবণও দিয়েছে বিনামূল্যে আর সেই জায়গায় একটি গরুর চামড়া ৫শ টাকায়ও কিনছে না আড়তদাররা! সব ক্ষেত্রেই সিন্ডিকেট।
একই গ্রামের মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী মিজান জানান- আমি ৩-৪শ টাকা দরে চামড়া কিনেছি। আড়তদারদের গাড়ি আসে কিন্তু কেউ কিনা দামও বলে না। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন- রাত ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে যা বলে তাতেই বিক্রি করে দিব।
একই উপজেলার মহিচাইল জামিরাপাড়া গ্রামের মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান- এবছর আমি গড়ে ৪২০ টাকা দরে ৩৬টি চামড়া কিনেছি। এখন ৩৫০ টাকার বেশি কেউ বলছে না। মূলত যে কয়েকজন আড়াতদার আছে তারা সিন্ডিকেট করে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এসব ঘটনায় প্রশাসন সরাসরি হস্তক্ষেপ করা উচিত।
দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের বাতাপুকুরিয়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি কাজী হানিফ জানান- এ সমাজের কেউ চামড়া বিক্রি করে না। সব চামড়া মসজিদে দিয়ে দেয়। এ বছর আমরা ১১৪টি চামড়া পেয়েছি। কেউ এসে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ আবার কেউবা ৪শ টাকা করে প্রতিটি চামড়ার দাম বলছে। সরকারের নির্ধারিত দামের অর্ধেকও বলছে না ক্রেতারা। অপেক্ষায় আছি (রাত পৌঁনে ৮টা) ক্রেতার অপেক্ষায়। সরকার বিভিন্ন মাদ্রাসায় বিনা মূল্যে লবণ দিয়েছে, আমরা লবণও পাইনি।
বুড়িচং উপজেলার নিমসার এলাকার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান- আমি নিমসার বাজারের কাঁচা মালের ব্যবসা করি। প্রতি কোরবানি ঈদে আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে চামড়া কিনি। এবারও ২৩০টি চামড়া কিনেছি। প্রতিটি চামড়া ৪০০-৪৫০ টাকায় কিনেছি। এখন আড়তদাররা এসে গড়ে ৪শ টাকা করে বলছেন। অপেক্ষা করছি, মূল্য না পেলে লবণ দিয়ে দিবো।
উল্লেখ্য, এ বছর ঢাকায় লবণ যুক্ত গরুর চামড়া ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাহিরে লবণযুক্ত প্রতিটি গরুর চামড়া ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।