কুমিল্লার
মুরাদনগরে রান্না করার সময় প্রতিবেশির ঘরে ধোঁয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করে
ঝগড়ার জেরে গরম পানি ছুড়ে এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১১ জুন) সকালে মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার বেনিখলা গ্রামে ঘটনা
ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বপ্না আক্তার নামের ওই গৃবধূকে ঢাকার জাতীয়
বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আহত স্বপ্না
বেনিখলা গ্রামের বাসিন্দাসংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী নাছির উদ্দিনের
স্ত্রী। অভিযুক্ত আবদুল কুদ্দুস মোল্লা আহত স্বপ্না আক্তারের আপন চাচা
শ^শুর বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার সকালে নিজ
বাড়ির উঠানে ভাত রান্না ও গরুর জন্য পানি গরম করছিলেন দুই সন্তানের জননী
স্বপ্না আক্তার। রান্নার সময় ‘অতিরিক্ত ধোঁয়া উঠে পাশর্^বর্তী ঘরে যাওয়ার’
অভিযোগ এনে স্বপ্না আক্তারের চাচা শ^শুর আবদুল খালেক মোল্লা তাকে গালমন্দ
করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করায় খালেক মোল্লা চুলায় বসানো গরম পানি স্বপ্না
আক্তারের শরীরে ছুড়ে মারেন। এসময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার
করে প্রথমেম দেবিদ্বার উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে
যান।কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে দ্রুত ঢাকার জাতীয় বার্ণ
ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে স্বপ্নার
স্বজনরা তাকে সেখানে নিয়ে যায়।
বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে
স্বপ্না আক্তারের সাথে থাকা তার ভগ্নিপতি জসিম উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘স্বপ্না
আক্তারের মুখ, বুক, কাধ, পাসহ শরীরে বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। তবে কত অংশ
পুড়েছে, তা এখনই বলা যাবে না। সার্জারি বা বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকেরা ওই
তথ্য দিতে পারবেন। হাসাপাতালের বিছানায় স্বপ্না যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।’
দেবিদ্বারে
হাসাপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার সময় স্বপ্না আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের
রান্নার ধোঁয়া নাকি আমার চাচা শ^শুরের ঘরে ঢুকে। এ নিয়ে কিছুদিন যাবত
মনোমালোন্য চলে আসছে। আমি সকালে ভাত রান্না ও গরুর পানি গরম করার জন্য
চুলায় আগুন দেই। হঠাৎ আমার চাচা শ^শুর এসে আমাকে ও আমার শ^শুরকে গালমন্দ
করতে থাকে। গালমন্দ করার প্রতিবাদ করলে আমার চুলায় থাকা গরম পানি আমার উপর
ঢেলে দেয়।’
স্বপ্না আক্তারের শাশুড়ি ফিরোজা বেগম বলেন, ‘রান্নার চুলার
ধোঁয়া তাদের ঘরে নাকি ঢুকে, এ নিয়ে মূলত শত্রুতা। ওই বিষয় নিয়ে নিয়ে আরো
কয়েকবার কথা-কাটাকাটি হয়। এমন তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে গরম পানি ঢেলে আমার ছেলের
বউয়ের শরীর ঝালিয়ে দিবে, তা ভাবতেও পানিনি।
অভিযোগের বিষয়ে আবদুল কুদ্দুস মোল্লার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
এ
বিষয়ে জানতে বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে বাঙ্গরা বাজার থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান, ‘সন্ধ্যায় বিভিন্ন মাধ্যমে
আমরা এই তথ্যটি জানতে পেরেছি। এরপর সাথে সাথেই ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো
হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।
অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’