বাংলাদেশের
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন এবং এর ফলে
উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং আশু করণীয় নিয়ে সরকারি, বেসরকারি, সুশীল
সমাজ ও একাডেমিয়ার মধ্যে কয়েক বছর ধরে বিস্তর আলাপ আলোচনা চলছে। সময় যতই
ঘনিয়ে আসছে ততই এ বিষয়ে আলোচনার গতি বাড়ছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের
শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে পৃথিবীর
সব দেশকে উন্নয়নশীল ও উন্নত এই দু’ভাগে ভাগ করা হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর
মধ্যে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোর মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও
অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, এই তিনটি আর্থসামাজিক সূচকের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালে ২৫টি
অপেক্ষাকৃত দরিদ্র উন্নয়নশীল দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে
চিহ্নিত করে যাত্রা শুরু হয়। স্বল্পোন্নত দেশ হলেও এসব দেশও একধরনের
উন্নয়নশীল দেশ। এর উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন প্রকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
প্রদানের মাধ্যমে এ সকল দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশ ১৯৭৩ সাল থেকে এলডিসি তালিকায়
অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করে এবং ১৯৭৫ সালে তালিকাভুক্ত হয়।
সেই থেকে বিগত পাঁচ দশক ধরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত এলডিসি দেশের তালিকায়
আছে বাংলাদেশ এবং এ তালিকায় থাকার কারণে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধাসহ নানা
সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রসংগত উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘ মাথাপিছু আয়,
মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, এই তিনটি আর্থ-সামাজিক সূচকের
ভিত্তিতে পৃথিবীর সব দেশকে উন্নয়নশীল ও উন্নত এই দু’ভাগে ভাগ করে;
অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রদানের শর্ত নির্ধারণের সুবিধার্থে শুধু
মাথাপিছু আয়ের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দেশকে নিম্ন আয়ের দেশ; নিম্ন মধ্যম
আয়ের দেশ, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করে।
তাই জাতিসংঘের বিবেচনায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ ও উন্নয়নশীল দেশ।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ।
জাতিসংঘের
অধীন একটি সংস্থা ‘কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)’ প্রতি তিন বছর পর
পর স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক
ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচক যাচাই কর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ
উত্তরণে তাদের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে থাকে। বর্ণিত তিনটি সূচকের যেকোনো
দুটি সূচকে জাতিসংঘের বেঁধে দেয়া মানদন্ড অনুযায়ী উত্তরণ যোগ্যতা অর্জন
করতে হয় কিংবা মাথাপিছু আয় নির্দিষ্ট সীমার তিনগুণ করতে হয়। এই মানদণ্ড
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি
(সিডিপি) এর পর পর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় এ তিন সূচকের মধ্যে যেকোনো
দুটি সূচকে সাফল্য অর্জন করতে পারলে একটি দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা
দেয়া হয়। বাংলাদেশ ২০১৮ ও ২০২১ সালে সিডিপি-এর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায়
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের লক্ষ্যে তিনটি সূচকেই প্রয়োজনীয় যোগ্যতা
অর্জন করেছে। ফলশ্রুতিতে সিডিপি’র সুপারিশের প্রেক্ষিতে ২৪ শে নভেম্বর ২০২১
তারিখে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬ তম বৈঠকে বাংলাদেশের
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়টি অনুমোদন লাভ করে এবং
একই সাথে কোভিড-১৯ এর ক্ষতি বিবেচনায় বাংলাদেশকে অতিরিক্ত দুই বছরসহ মোট
পাঁচ বছর প্রস্তুতিকাল প্রদানের সুপারিশ করে। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ
প্রদত্ত পাঁচ বছর প্রস্তুতিকালীন সময় শেষে বাংলাদেশ ২৪ শে নভেম্বর ২০২৬
সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ যদি এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ হয়, তাহলে বাংলাদেশই হবে প্রথম দেশ,
যারা তিনটি সূচকেই উত্তীর্ণ হয়ে বের হবে। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে
স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা ৪৪ টি। এ পর্যন্ত গত পাঁচ দশকে সব মিলিয়ে মাত্র
আটটি দেশ এলডিসি থেকে বের হয়েছে এবং ছয়টি দেশ উত্তরণ পর্যায়ে আছে, যার
মধ্যে বাংলাদেশও আছে। একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য যে, স্বল্পোন্নত দেশের
তালিকায় অর্ন্তভূক্তির বিষয়টি একটি দেশের ঐচ্ছিক বিষয় কিন্তু উত্তরণের
ক্ষেত্রে বিষয়টি বাধ্যতামূলক।
স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা বা ভোগ করে আসছে। যেমন, স্বল্পোন্নত দেশ
হিসেবে বাংলাদেশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭ টি দেশসহ বিশ্বের ৩৮ টি দেশে শুল্ক
মুক্ত ও কোটা মুক্ত বাজার সুবিধা পেয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট
রপ্তানির ৭৩ শতাংশ এই শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধার আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চুক্তির আওতায় মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ প্রদান থেকে
অব্যাহতি সংক্রান্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প অত্যন্ত কম
মূল্যে স্থানীয় চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ পূরণ করছে। বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পের
বিকাশের ক্ষেত্রে এ সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভূক্ত হওয়ার কারণে স্থানীয় রপ্তানিকারকদের জন্য
বিভিন্ন ধরনের নগদ সহায়তা এবং রপ্তানি আয়ে কর রেয়াত প্রদানের সুবিধা,
স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য নির্ধারিত বিভিন্ন তহবিল হতে অর্থায়ন প্রাপ্তি,
বিভিন্ন কারিগরি সহায়তা প্রাপ্তি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায়
অপেক্ষাকৃত স্বল্পহারে চাঁদা প্রদান ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
স্বল্পোন্নত
দেশের তালিকা হতে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বর্তমানে প্রাপ্ত বর্ণিত সুযোগ
সুবিধাসমূহ অনেকগুলো প্রত্যাহার হবে বা ক্রমশ হ্রাস পাবে। এর ফলে কিছু
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরণ পরবর্তী সময়ে শুল্কমুক্ত
কোটামুক্ত সুবিধা না থাকলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের উপর আন্তর্জাতিক
বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন হারে শুল্ক প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য যে, স্বল্পোন্নত
দেশ হতে উত্তরণের পরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন,
যুক্তরাজ্য, কানাডা ও তুরস্কের বাজারে বাংলাদেশের শুল্ক মুক্ত সুবিধা বহাল
থাকবে। বিশ্ব বাণিজ্য সস্থার চুক্তির আওতায় প্রাপ্ত মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ
সংক্রান্ত সুবিধার অবর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ঔষধপণ্যের, বিভিন্ন পণ্য ও
সেবা যেমন বইপত্র, সফটওয়্যার প্রভৃতির ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ
সংক্রান্ত নিয়মকানুন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। উল্লেখ্য যে, ট্রেড রিলেটেড
ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (ট্রিপস) চুক্তি অনুসারে, বাংলাদেশ
স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ক্রান্তিকালীন সুবিধা পাবে।
উত্তরণের পরে বাংলাদেশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাকের
ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ মুল্য সংযোজনের প্রয়োজন
হবে। রপ্তানিপণ্যের উপর ঢালাওভাবে ভর্তুকি প্রদান করা সম্ভবপর হবে না।
স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য নির্ধারিত তহবিল হতে প্রাপ্ত রেয়াতি ঋণ ও
অর্থায়ন সুবিধা ক্রমশ হ্রাস/বন্ধ হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলার
জন্য প্রবর্তিত এলডিসি ফান্ড থেকে সহায়তা হ্রাস পাবে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন
আন্তর্জাতিক সংস্থায় প্রদত্ত চাঁদার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশ্ব
বাণিজ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ হতে এলডিসি হিসেবে
প্রাপ্ত সক্ষমতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগসহ বিভিন্ন
কারিগরি সহায়তা ক্রমশ হ্রাস পাবে।
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে
উত্তরণের ফলে বেশ কিছু নতুন সুযোগও তৈরি হবে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে
উত্তরণের পর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল
হবে - যা বৈদেশিক বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এর ফলে দেশে অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং
মানুষের জীবন-মানের উন্নতি হবে। উত্তরণ পরবর্তী দেশের ক্রেডিট রেটিং,
উৎপাদনশীলতা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে যা
রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। প্রতিযোগিতা বাড়ার ফলে নতুন রপ্তানি পণ্য
ও বাজার সৃষ্টির উদ্যোগ গৃহীত হবে। উচ্চ মূল্যমান ও উচ্চ মূল্য সংযোজিত
পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ এবং বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে। দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক
চাহিদা বৃদ্ধির ফলে যুগোপযোগী শ্রমশক্তি তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
কোন
দেশই আজীবন গরীব বা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকতে চায়না। স্বল্পোন্নত
দেশ হতে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে উত্তরণ
যাত্রাকে মসৃণ ও টেকসই করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন নীতিমালা, কৌশল, কর্মসূচি ও
পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উত্তরণ পরবর্তী পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার
লক্ষ্যে জাতিসংঘের গাইডলাইন অনুসারে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। টেকসই
উত্তরণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়
সংস্কার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা
প্রণয়ন করা হয়েছে। উত্তরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন মৌলিক বিষয়সমূহ যেমন বিশ্ব
বাণিজ্য সংস্থা সংক্রান্ত কতিপয় বিষয় বিনিয়োগ, স্থানীয় বাজার উন্নয়ন ও
রপ্তানি বহুমুখীকরণ; অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ ও ট্যারিফ যৌক্তিকিকরণ;
বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করবার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন কমিটি কাজ
শুরু করছে। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পরেও একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত
যাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাজারে শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখা
যায় সেই লক্ষ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিকট ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন
প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে। উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ঔষধপণ্যের ক্ষেত্রে
মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জসমূহ বিবেচনায়
রেখে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যয় ও সময়
হ্রাস করে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালানো
হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে সুবিধা আদায়
করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রফতানির ক্ষেত্রে কেবল তৈরি পোশাকের ওপর
নির্ভরশীলতা কমিয়ে পাটজাত দ্রব্য, ফুটওয়্যার, চামড়াজাত দ্রব্য ইত্যাদি
বৈচিত্র্যময় খাতকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের
যাত্রাকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দেয়া হচ্ছে।
আমাদের তরুণ প্রজন্মকে কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করার
উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি যথাযথ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশে দক্ষ
শ্রমশক্তি প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
স্বল্পোন্নত দেশ হতে
উত্তরণের প্রক্রিয়াটি ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী এবং এর সাথে আর্থ-সামাজিক
উন্নয়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্র জড়িত। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের
মানদণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট আর্থ-সামাজিক সূচকসমূহে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে
রয়েছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন
সূচিত হতে যাচ্ছে বিধায় বাংলাদেশ সরকার সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে সম্পৃক্ত
করে স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের টেকসই উত্তরণ নিশ্চিতকরণে জোর
প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যায় সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ এ
উত্তরণ যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব পরিমন্ডলে একটি দৃঢ় অবস্থান তৈরিতে
সক্ষম হবে।
লেখকঃ পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত।