বাজারে
আসছে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকার নতুন নোট। আগামী ১ জুন থেকে এই নোটগুলো বাজারে
ছাড়া হবে। এসব নোট প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় এবং
পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য কার্যালয় থেকে ছাড়া হবে। এসব নোটের
ডিজাইন ও প্রতীকে আসছে পরিবর্তন। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক
এ তথ্য জানিয়েছে।
এসব নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে
নোট ও ধাতব মুদ্রা চালু থাকবে। এ ছাড়া মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি
বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট
(যা বিনিময়যোগ্য নয়) ছাপানো হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে টাকা জাদুঘর থেকে
নির্ধারিত মূল্যে এসব নোট সংগ্রহ করা যাবে।
১০০০ টাকার নোটে কী থাকছে:
বাংলাদেশ
ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ১০০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক
নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ মিমি ী ৭০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ সুতি
কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ থাকছে।
নোটটিতে থাকছে বেগুনি রঙের আধিক্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নোটের
সামনে বাঁ পাশে থাকছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও সাভারের ছবি। নোটের মাঝখানের
ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা-কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে।
নোটের পেছন ভাগে আছে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি।
নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের
নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সামনের বাঁ পাশে ৫ মিমি চওড়া
নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে, যেখানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ ও
‘১০০০ টাকা’ খচিত আছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’
অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’
অংশে উজ্জ্বল রংধনু বার ওপর থেকে নিচে ওঠানামা করে।
৫০ টাকার নোটে কী
থাকছে: গভর্নর আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক
নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মিমি ঢ ৬০ মিমি। নোটটি শতভাগ সুতি
কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে থাকছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ।
নোটটিতে থাকছে গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য।
ব্যাংক নোটটির সামনের বাঁ পাশে
আহসান মঞ্জিলের ছবি। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা–কলিসহ প্রস্ফুটিত
জাতীয় ফুল শাপলার ছবি থাকছে। নোটের পেছনে জলছাপ এলাকার ডান পাশে থাকছে
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’–এর ছবি।
বাংলাদেশ
ব্যাংক জানিয়েছে, ৫০ টাকার নোটে মোট আট ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন
করা হয়েছে। নোটটির সামনে বাঁ পাশে ২ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা
হয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করা হলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল থেকে সবুজে
পরিবর্তিত হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডান পাশে একধরনের প্যাটার্ন
মুদ্রিত থাকবে—আলোর বিপরীতে ধরলে ‘৫০’ লেখা দৃশ্যমান হবে।
২০ টাকার নোটে কী থাকছে:
গভর্নর
আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ২০ টাকার ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা
হয়েছে ১২৭ মিমি ী ৬০ মিমি। নোটটি শতভাগ সুতি কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ
হিসেবে থাকছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ। নোটটিতে থাকছে সবুজ রঙের আধিক্য।
বাংলাদেশ
ব্যাংক জানিয়েছে, নোটটির সামনের বাঁ বাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ
মন্দিরের ছবি। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা-কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয়
ফুল শাপলার ছবি থাকছে। নোটের পেছন ভাগে জলছাপ এলাকার ডান পাশে থাকছে
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি।
নোটটিতে মোট পাঁচ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সামনে বাঁ পাশে ২ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা
সংযোজন করা হয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করা হলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল থেকে
সবুজে পরিবর্তিত হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডান পাশে একধরনের প্যাটার্ন
মুদ্রিত আছে-আলোর বিপরীতে ধরলে ‘২০’ লেখা দেখা যাবে।
বিষয়টি হলো, সব
ধরনের টাকা ও ধাতব মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় গত
এপ্রিলের শুরুতে হঠাৎ নতুন নোট বাজারে ছাড়া বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত নতুন
নোট বাজারে আসেনি। এ পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোকে নতুন নোট
দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ছেঁড়াফাটা ও পুরোনো ময়লা নোটে বাজার
সয়লাব হয়ে গেছে। ১ জুন থেকে বাজারে নতুন নোট এলে এই সংকট অনেকটা কাটবে বলেই
ধারণা করা হচ্ছে।