মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫
১০ আষাঢ় ১৪৩২
শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল এ বছরই চালুর তোড়জোড়
প্রকাশ: শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫, ১২:০৭ এএম |


হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ‘শেষ পর্যায়ে’- এমন কথা গত দুই বছর ধরেই শোনা যাচ্ছিল। তবে এবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বরছে, সার্বিক অর্থে কাজ একেবারে শেষের দিকে।
বিমানবন্দর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জুনের মধ্যে জাপানি চারটি কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বেবিচক। এরপর তারা জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করবে। এরপর টার্মিনালের ‘ট্রায়াল রান’ চলবে।
বেবিচক আশা করছে, এ বছরের মধ্যেই যাত্রীদের জন্য পুরো খুলে দেওয়া হবে এই দৃষ্টিনন্দন এই টার্মিনাল।
গত বুধবার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমন তথ্য দেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া।
দেশে বিমানবন্দর তৈরি থেকে শুরু করে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ, এয়ারলাইন্স ও উড়োজাহাজের উড়ানের প্রয়োজনীয় সনদ ও লাইসেন্স দেওয়া এবং বৈমানিকদের লাইসেন্স দেওয়াসহ আকাশ পরিবহন খাতের দেখভালের সার্বিক দায়িত্ব বেবিচকের। সেই হিসেবে থার্ড টার্মিনালের সার্বিক দেখভাল তারাই করছে।
গত বছরের ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ৯ অগাস্ট বেবিচক চেয়ারম্যান হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়াকে নিয়োগ দেয়। এরপর থেকে থার্ড টার্মিনালের কাজ দেখে আসছেন তিনি।
কাজের অগ্রগতি নিয়ে গত বুধবার তিনি বলেন, “থার্ড টার্মিনালের কাজ অলমোস্ট শেষের দিকে। শুধু ভিভিআইপি টার্মিনালে এখনো কিছু কাজ বাকি আছে যেগুলো শেষে হতে জুন-জুলাই লেগে যাবে। কারণ এখানে কন্ট্রাক্টের কিছু জটিলতা ছিল। সেগুলো শেষ করতে একটু সময় লেগেছে। আর কিছু জিনিস যেমন- মেঝের গ্রানাইট, সিলিংয়ের কিছু উপকরণ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে, সে কারণেও একটু সময় লেগেছে।”
প্রতিদিনই থার্ড টার্মিনালের কাজ পরিদর্শনে যান জানিয়ে বিমান বাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের টার্গেট হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব থার্ড টার্মিনালের কাজটা শুরু করা। কারণ আমরা তো টাকাটা লোন হিসেবে নিয়েছি। এটা আমাদের শোধ করতে হবে। তাই আমরা দ্রুত অপারেশন শুরু করতে চাই।
“আমাদের এখন থার্ড টার্মিনালের প্রতিটি মেশিন একটা একটা করে চেক করতে হচ্ছে। আমাদের টার্গেট আছে এই বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করে টার্মিনালটাকে চালু করা।”
থার্ড টার্মিনালের পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের (অপারেশন্স অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) কাজ করবে জাপানের চারটি কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়াম। তাদের সঙ্গে থেকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স বিমান ফ্লাইট পারিচালনার পাশাপাশি স্বাধীনতার পর থেকেই বিমান বন্দরটিতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিয়ে আসছে। তবে বিমানের সেবা নিয়ে এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে অসন্তোষও রয়েছে।
গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে বিমানের নিযুক্তি, পুরনো অসন্তোষ এবং জাপানি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিমানের কর্মপ্রক্রিয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নে বেবিচক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবীর বলেন, “এখন পর্যন্ত আমাদের যে নির্দেশনা আছে তাতে বিমান আগামী দুই বছরের জন্য এই কাজটা করবে। এর জন্য উঁচু লেভেলের উপদেষ্টা কমিটি হয়েছে। কিন্তু পুরো কাজটা হবে জাপানিজ কোম্পানির তত্ত্বাবধানে। বিমানের সঙ্গে জাপানিজ কনসোর্টিয়ামের এসএলএ (সার্ভিস লেবেল এগ্রিমেন্ট) হবে। সেই এগ্রিমেন্টের আন্ডারে তারা কাজ করবে।
“আর আমার (বেবিচকের সাথে) সাথে এগ্রিমেন্ট হবে জাপানিজ কনসোর্টিয়ামের। সেই চুক্তির আওতায় আমি তাদের ‘কি পারফর্মেন্স ইন্ডিকেটর’ (কেপিআই) দিয়ে দেব।”
অনেকগুলো জায়গাতে কেপিআই নির্ধারণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেপিআইগুলো বিশ্বের স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে মিল রেখে সেট করা হয়। ব্যাগেজ সার্ভিস থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা সেবার ক্ষেত্রে এটা সেট করা হবে। সার্ভিসগুলো নির্দিষ্ট একটা মানের নীচে গেলে আমরা তাদের পেনালাইজ (শাস্তি) করতে পারব। এছাড়া বিমানবন্দরে কাজ করা ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ প্রত্যেকটা অর্গানাইজেশনকে কেপিআই দেওয়া হবে, প্রত্যেককে তাদের কাজের মানের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। সেখানে ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স’ বলে একটা সংস্থা থাকবে যারা পুরো অপারেশনটা সবসময় তত্ত্বাবধান করবে।”
জুনের মধ্যেই জাপানি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হবে বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান।
জাপানি কনসোর্টিয়ামকে কাজ শুরু করতে ৫-৬ মাস দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নেগোসিয়েশন শেষ হলে তাদের লোকজন নিয়োগ করতে হবে, ট্রেনিং দিতে হবে, ইকুইপমেন্টগুলোর জন্য লোকজনকে আলাদাভাবে ট্রেনিং দিতে হবে। ট্রেনিংয়ের পর লাগেজ হ্যান্ডলিং, স্ক্যানিং মেশিন থেকে শুরু করে ইডিএস (এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম), প্রত্যেকটা ইকুইপমেন্ট রান করে দেখতে হবে।
“একটা টার্মিনাল অপারেশন করতে গেলে কমপ্লিট সিস্টেমটাকে রান করানো, মকডাউন করে এগুলোকে টেস্ট করতে হবে। প্রত্যেকটা জিনিস চেক করতে হবে। ইমারজেন্সি হলে কী করবে তার প্রাক্টিস চলবে। এই জিনিসগুলো করতে কিছু সময় লাগবে। এজন্য কিছু সময় লাগবে। এগুলো শেষ করে ফুল চালু হয়ে গেলে আমরা টার্মিনাল খুলে দেব। আমরা আশা করছি এই বছরের মধ্যে শেষ করতে পারব।”
২০১৭ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থার্ড টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেসময় বেবিচক জানিয়েছিল, ২০২৪ সালেই পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হবে থার্ড টার্মিনালের। কিন্তু তা আর হয়নি।
 












সর্বশেষ সংবাদ
সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম নিয়ে ৮০ শতাংশ ‘সন্তুষ্ট নয়’
কুসিকের ৯৯৭ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন
কুমিল্লায় বোগদাদ পরিবহনের বাস কাউন্টারে হামলা॥ আহত ১
লালমাইয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার
ব্রাহ্মণপাড়ায় পানিতেডুবে শিশুর মৃত্যু
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
ডেঙ্গুতে রেডজোন দাউদকান্দি ৫ দিনে আক্রান্ত ১১শ
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে অপসারন দাবিতে মানববন্ধন
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা পুলিশ হেফাজতে
কুমিল্লায় সরকারি তথ্যের সাথে ডেঙ্গু সংক্রমণের বাস্তবতার মিল নেই
সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম নিয়ে ৮০ শতাংশ ‘সন্তুষ্ট নয়’
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২