১৯৭১
সালের ৪ মার্চ ক্যান্টনমেন্টে সৈন্য ফিরিয়ে নিয়ে যান পূর্ব পাকিস্তানের
চিফ মার্শাল ল' অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার সাহেবজাদা
লে. জেনারেল ইয়াকুব আলী খান। পরের দিন ৫ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে
খানকে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। সেই পত্রে সাহেবজাদা স্বীকার করে নেন কার্যত
সরকারের প্রধান এখন শেখ মুজিবুর রহমান।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও
বুদ্ধিজীবী রেহমান সোবহানের 'উতল রোমন্থন: পূর্ণতার সেই বছরগুলো' গ্রন্থে
সাহেবজাদা ইয়াকুব আলী খানের পদত্যাগপত্রের কয়েক লাইন বক্তব্য উদ্ধৃত করা
হয়েছে। পাকিস্তানের আরেক সামরিক কর্মকর্তা খাদিম হোসেন রাজার লেখা 'এ
স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি: ইস্ট পাকিস্তান, ১৯৬৯-১৯৭১' গ্রন্থ থেকে
নেওয়া হয়েছে সাহেবজাদা ইয়াকুব আলী খানের পদত্যাগপত্রের এই বক্তব্য।
পূর্ব
পাকিস্তানের চিফ মার্শাল ল' অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের পত্রের ভাষা ছিল এই রকম,
'প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে শেখ মুজিবের হাতে; সে এখন কার্যত সরকারের
প্রধান এবং সমস্ত জনজীবন নিয়ন্ত্রণ করছে... আমি নিশ্চিত এমন কোনো সামরিক
সমাধান নেই যেটা বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থবহ হতে পারে। ফলে সামরিক সমাধান
মিশন কার্যকর করার দায়িত্ব নিতে আমি অক্ষম- যে মিশনের অর্থ দাঁড়াবে ব্যাপক
হারে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ হত্যা এবং যেটা কোনো সুস্থ লক্ষ্যে পৌঁছবে না।
এর পরিণতি হবে বিধ্বংসী।'
নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ হত্যা এড়াতে
সাহেবজাদা ইয়াকুব আলী খান এই পদপত্যাগপত্র দিয়ে নিজে থেকে পূর্ব
পাকিস্তানের সর্বময় ক্ষমতা থেকে সরে যান ১৯৭১ সালের ৫ মার্চ। ওই দিন
সার্বিক অবস্থা অবহিত করতে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে ছুটে যান আরেক সামরিক
কর্মকর্তা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন
আহমদের 'আওয়ামী লীগ: যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১' গ্রন্থে তার বর্ণনা রয়েছে।