চলছে
বর্ষার ভরা মৌসুম। কৃষকের ফসলি মাঠ জুড়ে কমছে ফসলের আবাদ। আবাদের ঘাটতিতে
শাক-সবজি সরবরাহের সঙ্কট দেখা দিয়েছে কুমিল্লার বিভিন্ন সবজি বাজারে।
প্রতিদিন
সকাল, বিকাল এবং রাতের যেকোনো সময় কখনও ইলশেগুঁড়ি আবার কখনও হচ্ছে
মুশলধারে বৃষ্টি। বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলের মাঠ, ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে কৃষক। অন্যদিকে বাজার জুড়ে বেড়েছে সবধরনের তরু-তরকারির দাম।
গতকাল
(মঙ্গলবার) কুমিল্লা নগরীর নিউমার্কেট, রাজাগঞ্জ এবং অন্যান্য বাজার ঘুরে
দেখা যায়, সরবরাহের ঘাটতি থাকায় সুলভ মূল্যে মিলছে না কোনো তরু-তরকারি।
আবার তরুতরকারি পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।
টানা কয়েক দিনের
বৃষ্টিতে কুমিল্লার বাজারগুলোতে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। প্রতি কেজি মরিচ
বিক্রি হচ্ছে আড়াইশো টাকা থেকে ৫’শ টাকায়। গতকাল বিকালে নগরীর নিউমার্কেট
কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাজারে আছে মাত্র ২০ কেজি কাঁচা মরিচ।
বৃষ্টিতে সরবরাহ কমায় বেড়েছে মরিচের দাম। কমেছে চাহিদা।
নগরীর ঝাউতলা
থেকে নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা হাসান মুহাম্মদ কাইয়ুম বলেন, আগে প্রতি
কেজি কাঁচা মরিচ কিনা যেতো মাত্র ৫০ টাকায়। অথচ আজ আড়াইশো গ্রাম কাঁচা
মরিচই কিনতে হয়েছে ৫০ টাকা দিয়ে। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধির পেছনে
বর্ষা এবং আবাদ সঙ্কটকে দায়ী করেছেন এই ক্রেতা।
নগরীর নিউমার্কেটের
তরকারি দোকানদার ফুল মিয়া বলেন, পাইকারি বাজার থেকে চড়া দামে কাঁচা মাল
কেনায় বেড়েছে তরকারির দাম। দাম বাড়ায় আমাদের খুচরা দোকানগুলোতে সুলভ মূল্যে
মিলছে না কাঁচা মরিচ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য তরুতরকারি। তবে আবহাওয়া
স্বাভাবিক হলে সবকিছুর দাম কমে আসবে।
নিউমার্কেটের আরেক তরকারি দোকানদার
শামসু মিয়া বলেন, প্রতিদিন কুমিল্লার সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার নিমসার থেকে
কাঁচামাল সংগ্রহ করেন তিনি। টানা বৃষ্টির কারনে আজকের বাজারে কাঁচা মরিচ
বিক্রি করছেন কেজি প্রতি ২৫০ টাকা থেকে ৩’শ টাকায়। এছাড়া পাইকারি বাজারে
কাচামালের সঙ্কট থাকায় টাকা দিয়েও মিলছে না তরুতরকারি।
এছাড়া নিউমার্কেট
কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি দেশি শশা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। সাধারণ শশা
বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা।
লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। ১
আঁটি কলমি শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। ধনিয়া পাতা ১০০ গ্রাম ৩০
টাকা। লত ছিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। পুইশাক বিক্রি হচ্ছে ৪০
টাকা থেকে ৫০ টাকায়। আলু ৬০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, শশী ৫০ থেকে ৬০ টাকা,
পটল ৫০ টাকা, ছড়া ৮০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কুমড়া ৪০ টাকা,
ঢেড়ষ ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, প্রতি হালি লেবু ২৫ টাকা থেকে
৩০ টাকা, কলা ৫০ টাকা, গাজর ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাকরল ৮০ টাকা, কৈডা ৬০
টাকা, কেপচিকাম ৩৫০ টাকা থেকে ৫’শ টাকা এবং কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০
টাকা থেকে ৪’শ টাকায়।
গত কিছু দিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা
মরিচ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র। চলতি সপ্তাহে দাম কিছুটা কমলেও
সরবরাহের ঘাটতি থাকায় বাজারগুলোতে ঝাঁঝ বেড়েছে কাঁচা মরিচ সহ সকল
নিত্যপন্যে।
প্রতি বছর এই সিজনে আবহাওয়া খারাপ থাকে। বৃষ্টি-বাদলের
কারণে মরিচ গাছের গোড়া পচন ধরে গাছ মরে যায়। যার কারনে মাঠ জুড়ে কমে মরিচের
আবাদ। সরবরাহের ঘাটতি দেখা যায় নগরীর প্রায় সব কাঁচা বাজারে। আবহাওয়া
স্বাভাবিক হলে কমে আসবে কাঁচা মরিচ সহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম
এমনটাই প্রত্যাশা।