নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়ে চুন উৎপাদন
করায় একটি চুন কারখানায় অভিযান চালিয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন
কোম্পানি লিমিটেড (বিজিডিসিএল)। অভিযানে চারজনকে আটক করা হয়েছে এবং বিপুল
পরিমাণ অবৈধ গ্যাস সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ গ্যাস আইন,
২০১০ অনুযায়ী মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিজিডিসিএল সূত্রে
জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ সকাল ১১টার দিকে চৌদ্দগ্রাম থানাধীন ১০
নম্বর বাতিসা ইউনিয়নের পূর্ব আটগ্রাম এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে
অবস্থিত একটি চুন কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে
বিজিডিসিএলের ভিজিল্যান্স টিম চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার পুলিশের সহায়তায় এ
অভিযান পরিচালনা করে।অভিযুক্তরা বিজিডিসিএলের ৮ ইঞ্চি বিতরণ লাইন থেকে
অবৈধভাবে হট ট্যাপিং করে ২ ইঞ্চি সার্ভিস-টি স্থাপন করেন। পরে প্রায় দেড়
হাজার ফুট দূরে এইচডিডি পদ্ধতিতে পাইপলাইন বসিয়ে একটি চুন কারখানায় গ্যাস
সরবরাহ করা হচ্ছিল। সেখানে দুটি চুনের ফার্নেসে মোট ১২টি ফোকাস বার্নারের
মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস ব্যবহার করে চুন উৎপাদন চলছিল।
ঘটনাস্থল
থেকে ফারদুল মিয়া (৪০), আসাদুল ইসলাম (৩৮), মো. লিপু মিয়া লিবলু (২৮) ও মো.
রুবেল মিয়া (৩০) নামে চারজনকে আটক করা হয়। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে
জানান, প্রায় এক মাস ধরে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে চুন উৎপাদন করে
আসছিলেন। এছাড়া জমির মালিকসহ আরও কয়েকজন অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।
অভিযানকালে
২ ইঞ্চি প্লাস্টিক পাইপ (মোট ৩০০ ফুট), ১২টি ফোকাস বার্নার ও একটি
কানেক্টর জব্দ করা হয়। অবৈধ সংযোগটি তাৎক্ষণিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে সোর্স
লাইন কর্তন করা হয়। জব্দকৃত কিছু মালামাল থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।
বিজিডিসিএল
কর্তৃপক্ষ জানায়, অবৈধভাবে ব্যবহৃত গ্যাসের পরিমাণ মাসিক আনুমানিক ১ লাখ
৮২ হাজার ৪৫০ ঘনমিটার, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। গ্যাস
বিপণন বিধিমালা অনুযায়ী জরিমানা ও বকেয়া মিলিয়ে মোট আদায়যোগ্য অর্থের
পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ১৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৮ ইঞ্চি বিতরণ লাইনে হট
ট্যাপিং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জান-মালের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা ছিল
বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।এ ঘটনায় প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকারিয়া বাদী
হয়ে চৌদ্দগ্রাম মডেল থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। বাংলাদেশ গ্যাস আইন,
২০১০-এর ১২(১) ধারাসহ অন্যান্য প্রযোজ্য ধারায় আটক ও পলাতক আসামিদের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
