‘গত
১৭ বছর দেবিদ্বারে কোন রাজনীতি ছিল না, আমার নেতা-কর্মীদেরকে রক্ষা করার
জন্য আওয়ামীলীগের এমপি রাজী ফখরুলের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়েছে। এরপর আবুল
কালাম আজাদ এমপি হইছে, শুধুমাত্র আপনাদের রক্ষা করার জন্য তাদের সঙ্গে
মিলেমিশে ছিলাম যেন আপনাদের এলাকা ছেড়ে যেতে না হয়। তা না হলে আপনাদের
বিরুদ্ধে বহু মামলা হতো’
ত্রয়োদশ সংসদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে
গত বুধবার কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গোপালনগর ভূঁইয়া
বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি উঠান বৈঠকে কুমিল্লা-৪ আসন
(দেবিদ্বার) থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জি.মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী এসব
কথা বলেন। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির রাজনৈতি অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়। বক্তব্যের ভিডিওটি অনেকেই ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
ওই
ভিডিওতে ইঞ্জি. মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীকে আরও বলতে শোনা গেছে, ১/১১ এর
সময় দেবিদ্বার থানা থেকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে শুধু একটা গেঞ্জি পরিয়ে আমাকে
পুরো দেবিদ্বার ঘোরানো হইছে। তারপরও আমি থেমে যাইনি। কারণ আমি এ এলাকার
মানুষকে ভালোবাসি। আমার বয়স হয়েছে কিন্তু সময়ের কারণে আমার অনেক ওয়াদা পূরণ
করতে পারিনি। ২০০৬ সালে নির্বাচন করতে পারিনি। তার বক্তব্যের ভিডিওটি
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ফেসবুকের কমেন্টে আফফান
বিন আব্দুস সালাম নামে একজন লেখেন, ‘তাহলে বুঝা গেল এখনো তাল মিলাবে।
রক্তের সঙ্গে তো গাদ্দারী করতে পারবো নাহ। সাবধান দেবিদ্বারের মানুষ।’
গোলাম রাসুল নামে অপর একজন লেখেন, ‘বালু টাক কেন সরানো যায়নি এখান থেকেই বোঝা যায়’
বক্তব্যটি
নিজের ফেসবুকে শেয়ার করে কেন্দ্রীয় যুব শক্তির সদস্য নাজমুল হাসান নাহিদ
লেখেন,এই বক্তব্য শুনে আমার তৃণমূল বিএনপির ভাইদের জন্য, যাঁরা
ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, মার খেয়েছে,তাদের জন্য অনুশোচনা হচ্ছে।
তৃণমূল সব সময়ই নির্যাতিত ছিলো। এই বক্তব্য অনুযায়ী নেতারা রাতের আধারে
নেতাদের (আওয়ামীলীগ এমপিদের) সাথে সঙ্গে মিলেমিশে চলতেন !!যে অন্যায়ের
বিরুদ্ধে তৃণমূল লড়েছে, সেই অন্যায় কি নেতৃত্বের চোখে পড়েনি? নাকি নির্যাতন
ছিলো কেবল সাধারণ কর্মীদের জন্য, আর সমঝোতার আলোচনাগুলো ছিলো ব্যাকডোরের
অন্ধকারে? তাহলে প্রকৃত সত্যটা কোথায়—নির্যাতনের ইতিহাস, নাকি রাতের গোপন
সখ্যতা? আপনরাই বিচার করবেন।
ফেসবুকে মোহাম্মদ মামুন লেখেন, সত্যি কথা
বেশি দিন চাপা থাকে না। কোনো না কোনো সময় অকপটে বেরিয়ে আসে। গ্রাম্য ভাষায়
একটি কথা আছে-ফোটকার সাক্ষী ফোটকায় দেয়। মীরজাফরী করে এখন নিজের মীরজাফরীকে
নরমালাইজ করার জন্য এর সপক্ষে আরো অনেক যুক্তি দেবে। প্রসঙ্গত, গত ৩
নভেম্বর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কুমিল্লা-৪
(দেবিদ্বার) আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক চারবারের এমপি ও
কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জি. মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর নাম
ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।
