
অ্যাথলেটিক্স
মাদার অব অল ডিসিপ্লিন হিসেবে খ্যাত। বাংলাদেশেও এক সময় ছিল অ্যাথলেটিক্সে
স্বর্ণালী যুগ। কালের বিবর্তনে সেই অ্যাথলেটিক্স অনেকটা বিবর্ণ। তবে
ইংল্যান্ড প্রবাসী ইমরানুর রহমান এশিয়ান ইনডোরে স্বর্ণ জেতার পর গত তিন বছর
ধরে আলোচনায় অ্যাথলেটিক্স।
অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি
তৃণমূল পর্যায়ে শিশুদের মাঝে অ্যাথলেটিক্সের বার্তা পৌঁছে দিতে যায়। এজন্য
বিশ্ব অ্যাথলেটিকসের ‘গ্রান্ট ফর গ্রোথ’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ
অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন (বিএএফ) ‘অ্যাথলেটিকস কম্পাস’ নামের এক বিশেষ উদ্যোগ
গ্রহণ করেছে। অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন গ্রাসরুট পর্যায়ে অ্যাথলেটিক্স আয়োজনের
প্রস্তাব দিলে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস ৩০,০০০ মার্কিন ডলার অনুদান প্রদান
করেছে। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থ বাংলাদেশ গ্রহণও করেছে।
স্কুলগামী
শিক্ষার্থীদের খেলাধূলায় সম্পৃক্ত করে তাদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়ন
নিশ্চিত করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। এই প্রকল্পে ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সি প্রায়
২৫,০০০ শিক্ষার্থী অংশ নেবে। যশোর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি, ময়মনসিংহ ও
ঢাকা—এই ছয় জেলায় আলাদাভাবে প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দৌড়,
লাফ, থ্রো ও সেফগার্ডিংয়ের মৌলিক দক্ষতা শিখবে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ৯৬
জন শারীরিক শিক্ষার শিক্ষককে দেওয়া হবে অ্যাথলেটিকসের মৌলিক প্রশিক্ষণ,
যাতে তারা সারা বছর শিক্ষার্থীদের খেলাধূলায় যুক্ত রাখতে পারেন।
অ্যাথলেটিক্স
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য
জাতীয় পর্যায়ের দক্ষ অ্যাথলেট তৈরি নয়; বরং শিক্ষার্থীদের পরিবার-পরিজনকে
খেলাধুলার সংস্কৃতিতে যুক্ত করা, যাতে তারা সুস্থ থাকতে পারে, অসুস্থতা কমে
এবং সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।' তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক
জরিপের কথা উল্লেখ করে বলেন, ৮১ শতাংশ শিশু প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা
খেলাধুলার সুযোগ পায় না। 'আমরা বিশ্বাস করি প্রতিটি শিশু জন্মগতভাবেই
নড়াচড়া, খেলা ও অন্বেষণের জন্য তৈরি,'—যোগ করেন সাবেক এই তারকা অ্যাথলেট।
প্রকল্প
ব্যবস্থাপক ও ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক কিতাব আলী বলেন, 'আমরা প্রথম সারির
অ্যাথলেট খুঁজে বের করার জন্য এই আয়োজন করছি না; আমাদের লক্ষ্য
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে যদি মাত্র ৫
জনও মূলধারার অ্যাথলেটিকসে যোগ দিতে পারে, তবুও আমরা সন্তুষ্ট।' সাবেক
জাতীয় কোচ কিতাব আলী জানান, তহবিলের প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে প্রকল্পটি
২০২৭ সাল পর্যন্ত চলবে। ১০-১৬ ডিসেম্বর যশোর, ২০-২৪ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ,
২৭-৩১ ডিসেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলা, ৫-৯ জানুয়ারি রাঙামাটি, ২১-২৫ জানুয়ারি
শেরপুর জেলার ঝিনাইঘাতি উপজেলায় প্রকল্প চলবে।
বাংলাদেশ সম্প্রতি সাফ
অ্যাথলেটিক্সে অংশগ্রহণ করেছে। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পূর্বে দলীয়
ব্রিফিংয়ে ফেডারেশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অবঃ) ড. মোঃ নাঈম আশফাক চৌধুরী
স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্র জয়ীদের ক্রমানুসারে ৩, ২ ও ১ লক্ষ টাকা অর্থ
পুরষ্কারের ঘোষনা করেন। সে প্রেক্ষিতে আজ ব্রোঞ্জজয়ীরা অর্থ পুরষ্কার
পেয়েছেন।
৪*১০০মিটার রিলে (পুরুষ) ইভেন্টে ৪০.৯৪সে. সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ
পদক অর্জন করেন মোঃ ইসমাইল, মোঃ তারেক রহমান, আব্দুল মোতালেব ও মোঃ লুসাদ
ইসলাম, ৪*৪০০মিটার রিলে (পুরুষ) ইভেন্টে ৩:১৫.০০সে. সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ জেতেন
মোঃ মাসুদ রানা, মোঃ তারেক রহমান, নাজিমুল হোসেন ও মোঃ লুসাদ ইসলাম এবং
৪*৪০০মিটার রিলে (মহিলা) ইভেন্টে ৩:৫৫.৬৩ সে. সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন
করেন শারিফা খাতুন, সুমাইয়া দেওয়ান, বর্ষা খাতুন ও নুসরাত জাহান রুনা।
