বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
‘ফলস স্মাটে’ কৃষকের সর্বনাশ
কুমিল্লায় কমছে আমন ফলন, লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কা
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:০৬ এএম আপডেট: ০৪.১২.২০২৫ ১:১৯ এএম |


‘ফলস স্মাটে’ কৃষকের সর্বনাশনিজস্ব প্রতিবেদক।। 
পোকার আক্রমণে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কুমিল্লা জেলার ধান চাষীদের কপালে। লক্ষ্যমাত্র পূরণ নিয়ে শঙ্কায় ভুগছে কৃষি বিভাগও।  এবারের আমনের মৌসুমে ‘ফলস স্মাট’ নামের পোকার আক্রমণের প্রভাব দিশেহারা করে দিচ্ছে পুরো কৃষি বিভাগকেই। চলতি মৌসুমে গত বছরের চেয়ে ধানী জমি বাড়লের এবার ফলনের লক্ষ্যমাত্রা কমে গেছে প্রায় দেড় হাজার মেট্রিকটন। যার প্রভাব পড়বে সামনের মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহেও। এদিকে ফলস স্মাটের সংক্রমনের ক্ষতি কমিয়ে আনতে অনেক জায়গায় পাকার আগেই ধান কেটে ফেলছেন কৃষকরা। কৃষিবিদরা বলছে, অপরিপক্ক ধানে চাউলের গুনগত মানও কমে যাবে। এই ধান থেকে বীজ সংগ্রও করা যাবে না। 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগের তথ্য মতে, গত বছরের তুলনায় ৪৬ হাজার ৮০৩ হেক্টর বেশি জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। প্রায় ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ বাড়লেও পোকার সংক্রমনের প্রভাবে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১ হাজার ৪০৭ মেট্রিক টন। এবছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন। গেলো বছর এই লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৭ মেট্রিক টন।  
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লায় আমন ধান কাটার মৌসুমে মাঠজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ছত্রাকজনিত রোগ ‘ফলস স্মাট’ বা স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘লক্ষীর গু’। এ রোগে ধানের স্বাভাবিক শস্যদানা পরিণত হচ্ছে হলদেটে-জলপাই রঙের গুটিতে। ফলে পুরোপুরি পাকার আগেই কৃষকরা তড়িঘড়ি করে কাঁচাপাকা ধান ঘরে তুলতে বাধ্য হচ্ছেন। সময়ের আগেই ধান কাটায় কমছে ফলন, বাড়ছে উৎপাদন ঝুঁকি। কুমিল্লার জেলার লালমাই, সদর দক্ষিণ, বরুড়া ও সদরসহ জেলার আমন ফসলের জমিতে একই চিত্র দেখা গেছে।
কৃষকদের অভিযোগ, মৌসুম ভাল থাকা সত্ত্বেও রোগবালাই আর পোকার আক্রমণে ফলনের পাল্লা বা আকার ছোট হয়ে আসছে। প্রতি বিঘায় উৎপাদন ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মাজরা পোকা, ফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা এবং ফলস স্মাট দমনে সময়মতো কার্যকর পরামর্শও মেলেনি। 
এদিকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভুল পরামর্শে বেনামি কোম্পানির অকার্যকর ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগও করেছেন তারা। কৃষকদের দাবি, ফলস স্মাটের আগে ধানের শীষ যখন বের হচ্ছিলো তখন ছিল মাজরা পোকার আক্রমণ। এ পোকা ধানের গোড়া দিয়ে কাটা ফলে শুকিয়ে গেছে শীষ। এর মাসখানেক পরই পাকা ধানে আক্রমন হয় ফলস স্মাট পোকার। যে কারণে আবাদ বাড়লেও পোকামাকড় ও রোগবালাই আক্রমণে যে ক্ষতিতার এ ক্ষতির প্রকৃত চিত্র ধান কাটা-মাড়াই শেষে স্পষ্ট হবে বলে মনে করেন কৃষকরা। 
লালমাই কাচি এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, সারা বছর পরিশ্রম করি এই ধানটাই ঘরে তোলার জন্য। কিন্তু পাকার মুখে ফলস স্মাট দেখে বুকটা হুহু করে উঠে। কাঁচাপাকা ধান কাটছি লক্ষীর গু আতঙ্কে।  কারণ মাঠে ধান থাকলেই রোগের আক্রমণ বাড়ছে। তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে ধান কেটে ফেলায় উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, সেই প্রত্যাশা পূরণ হবে না। এ শঙ্কা ছাড়াও খরচের চাপ, ঋণের বোঝা সব মিলিয়ে এখন রাতেও ঘুম আসে না।
বরুড়ার কৃষক আমিনুল হক বলেন, মাঠে দাঁড়ানো ধান দেখে ভেবেছিলাম এবার একটু ঘুরে দাঁড়াবো। কিন্তু ফলস স্মাট পুরো স্বপ্নটাই নষ্ট করে দিল। কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে গেছি, কিন্তু যে ওষুধ দিয়েছে তার কোন কাজই হলো না। এত কষ্ট করে ফসল করেও যদি এভাবে রোগে নষ্ট হয়, তাহলে আমরা বাঁচব কীভাবে?
লালমাইয়ের আরেক কৃষক মোতালেব মিয়া বলেন, ধান পেকে উঠলেই আনন্দ হওয়ার কথা, আর এখন সেটা ভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটা গুচ্ছ ধরে দেখি, কতটা দানা কালো হয়ে গেছে।
ব্রি ধান- ৪৯সহ কয়েকটি পুরনো জাতের ধানে ফলস স্মাট শনাক্তের কথা স্বীকার করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের মতে, মানসম্মত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ, বীজ শোধন ও জমির সঠিক পরিচর্যা করলে ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। 
কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে কুমিল্লার লালমাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লায়লা আরজুমান বেগম বলেন, ফলস স্মাট দমনে সঠিক বীজ শোধন, মানসম্মত ছত্রাকনাশক এবং জমির সঠিক পরিচর্যা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কৃষকরা অনেক সময় যাচাইবাছাই না করেই কমদামি বা অকার্যকর ওষুধ ব্যবহার করেন। এতে লাভের বদলে আরও ক্ষতি হয়। 
তিনি আরও বলেন, কৃষক সব সময় মনে করেন বাড়তি সার ব্যবহার করলেই ফসলের উৎপাদন বাড়বে। কিন্তু জমির যে খাদ্য বা জমির যে শক্তির প্রয়োজন সেজন্য জৈব সারের ব্যবহারও যে প্রয়োজন সেটি তাদেরকে বুঝিও ফলপ্রসূ কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরচিালক মোঃ মজিানুর রহমান বলনে, জমরি রোগ প্রতরিোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বষিয়ে কৃষকরা সর্তক ও সচতেন না হওয়ায় এই পোকার সংক্রমন। নতুন জাতরে ধান চাষে বয়সসীমা সঠকি না জনেে এই চাষাবাদ করায় এই পোকার সংক্রমন হয়ওে থাকতে পার।ে তবে জমি ব্যবহাররে জন্য উপযোগী করার সময় প্রতি হক্টেরে তনি কজেি ডোল চুন ব্যবহাররে পরার্মশ দনে তনি।ি 
উপ-পরচিালক মোঃ মজিানুর রহমান আরো বলনে, ধানী জমতিে জবৈ সাররে ব্যবহারও বাড়াতে হবে কৃষকদরে। 
তবে এই মৌসুমে ফলন কমার বষিয়ে এই র্কমর্কতা জানান, পোকার আক্রমনরে সাথে আরো একটি বশিষে কারণ হলো যারা নতুন জাতরে আমনরে চাষ করছেে তারা এই ধানরে আয়ুস্কাল সর্ম্পকে খুব বশেি জানে ন।ি   





















http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
‘কুমিল্লা জিলা স্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’ -এর কাছে কিছু প্রত্যাশা
মাদকাসক্তি চিকিৎসায় কুমিল্লার নিরাময় কেন্দ্র: আশা, চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা
সর্বক্ষেত্রে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে
আজ দেবিদ্বার মুক্ত দিবস
‘ফলস স্মাটে’ কৃষকের সর্বনাশ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে এমপি ইলেকশন করছি এটাই তো বড় বিষয়: হাসনাত আব্দুল্লাহ
কুমিল্লার ১৮ থানার লটারির মাধ্যমে নতুন ওসির পদায়ন
কুমিল্লায় ১৬ বছরের কিশোর নিখোঁজ: খোঁজ দিতে পরিবারের আকুতি
মাধ্যমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত
বাঁচতে চায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কুবি শিক্ষার্থী অনন্যা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২