নিজস্ব
প্রতিবেদক: ২০২৩ সালের অনার্স তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষায় নকল-অসদুপায় অবলম্বনের
অভিযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৭ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি
দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্ট বছরের পরীক্ষা বাতিল
করা হয়েছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে চলতি বছরের পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি
আগামী ১ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে
দেখা গেছে, অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে সবচেয়ে বেশি দণ্ডিত হয়েছেন জয়পুরহাট
সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানকার ১৭ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে
শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জামালপুর সরকারি আশিক মাহমুদ কলেজের ৬
শিক্ষার্থী, কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের ৯ শিক্ষার্থী, রাজশাহী নিউ গভ
সরকারি ডিগ্রি কলেজের ৯ শিক্ষার্থী, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের ৯
শিক্ষার্থী, নীলফামারী সরকারি জলঢাকা কলেজের ৭ শিক্ষার্থী, নোয়াখালীর
চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমদ কলেজের ১৪ শিক্ষার্থী, নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ৯
শিক্ষার্থী, গাইবান্ধা সরকারি কলেজের ৭ শিক্ষার্থী, রংপুর সরকারি কলেজের ৬
শিক্ষার্থী, কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ১৪ শিক্ষার্থীসহ
সারাদেশের মোট ১২৩টি সরকারি কলেজের ৩১৭ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেয়াদে
দণ্ডিত হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালের অনার্স তৃতীয়
বর্ষ পরীক্ষায় অসদুপায় সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনার লক্ষ্যে জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ৪ নভেম্বর
(মঙ্গলবার) বেলা ১১টায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও পরীক্ষা শৃঙ্খলা
কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায়
উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান ও প্রফেসর ড.
মো. নূরুল ইসলাম, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের
ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর ড. মো. আবুদ্দারদা, স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. মো. আশেক কবির চৌধুরী, রেজিস্ট্রার মোল্লা
মাহফুজ আল-হোসেন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিমসহ অন্যান্য
সদস্যরা।
সভায় বিভিন্ন কলেজ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরীক্ষক,
পর্যবেক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের পাঠানো প্রতিবেদন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের
কৈফিয়তপত্র ও উত্তরপত্রে পাওয়া নকলের আলামত পর্যালোচনা করা হয়। বিস্তারিত
আলোচনার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তি আরোপের
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধিকাংশ
শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা সংক্রান্ত আইনের ‘ঘ’ ধারায় দণ্ডিত করা হয়েছে।
শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট বছরের
পরীক্ষা বাতিলের শাস্তি পেয়েছেন, আবার কারও ক্ষেত্রে পরবর্তী তিন বছর
পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে
প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ পরীক্ষার সততা রক্ষায় কঠোর অবস্থানের কথা
পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার মান ও সুনাম
রক্ষায় যে কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
