কুমিল্লার
দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত
গাঁয়ের শার্ট ছিঁ ড়ে ফেলার ঘটনায় এক দালালকে আটক করে তিন মাসের বিনাশ্রম
কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা
নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাকিবুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর)
দুপুরে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত দালাল
মো. আক্তার হোসেন দেবিদ্বার পৌর এলাকার ছোটআলমপুর গ্রামের মো. রুহুল আমিনের
ছেলে। পরে বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আক্তার হোসেন দীর্ঘদিন উপজেলা
স্বাস্থ্য কর্মপ্লেক্সে আসা রোগীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সদরের বিভিন্ন
হাসপাতালে নিয়ে যায়। গত বছর জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসককে মারধর ও লাঞ্ছিত
করায় তাকে তিন মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মহিবুস সালাম খান ওই দালালকে হাসপাতালের জরুরি
বিভাগে দেখে তাকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে দালাল আক্তার হোসেন ওই কর্মকর্তার
ওপর চড়াও হয়ে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত ও গায়ের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে। খবর পেয়ে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাকিবুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে
ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন।
হাসপাতালের
চিকিৎসক ডা. মো. আরিফুল ইসলাম ও ডা.সাদ্দাম হোসেন বলেন, সম্প্রতি উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকে দালালমুক্ত রাখতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পক্ষ থেকে
বিভিন্ন প্রচারণা ও সচেতনামূলক বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে, সে বিলবোর্ডে দালাল
চেনাসহ তাদের কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ
বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তিনি আসার পর এ হাসপাতালে সেবার মান
বেড়েছে কিন্তু দালালদের কারণে এ সেবার মান ব্যাহত হচ্ছে। এক্ষেত্রে সাধারণ
মানুষ আরও সচেতন না হলে দালালদের নির্মূল করা সম্ভব হবে না। একাধিক
ভুক্তভোগী জানায়, দালাল আক্তার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতাল এলাকায় সক্রিয়
দালালচক্রের সদস্য। সে রোগী ও তাদের স্বজনদের বিভ্রান্ত করে বিভিন্ন
বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাগিয়ে নিয়ে কমিশন বাণিজ্যে করেন।
তাকে এর আগে কয়েকবার জেল দেয়া হলেও তার কার্যক্রম বন্ধ হয়নি।
ঘটনার
বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মহিবুস সালাম খান বলেন, হাসপাতালকে
দালাল মুক্ত রাখার জন্য আমরা হাসপাতালের ভিতর ও বাহিরে বিভিন্ন সচেতনমূলক
প্রচারণার বিলবোর্ড টানিয়েছি। দুুপুরে “জরুরি বিভাগে দালাল আক্তারকে দেখে
তাকে বের হয়ে যেতে বলি, সে বের না হয়ে আমার সঙ্গে তর্কে জড়ায়, একপর্যায়ে
সে আমার ওপর আক্রমণ চালায় এবং আমার গায়ের শার্ট ছিঁড়ে ফেলে।
দেবিদ্বার
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, “সরকারি কর্মচারীর
কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে আক্তার হোসেন নামে একজনকে দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায়
দোষী সাব্যস্ত করে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার জন্য
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সে আবার যদি
ফের প্রবেশ করে তাকে আবার জেল দেয়া হবে।
