মোঃ হুমায়ুন কবির মানিক ।।
শিক্ষক
আহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার লাকসামে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক
মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর)
দুপুর ২টার দিকে উপজেলার বিজরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিজরা রহমানিয়া
চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রায় ১২ শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়
লোকজন ন্যায়বিচারের দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
স্থানীয়
সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় ৬ শতক জায়গা লিজের আবেদন করলেও
বিদ্যালয়কে না দিয়ে অন্যদের নামে লিজ প্রদান করেন লাকসামের সহকারী কমিশনার
(ভূমি)। বৃহস্পতিবার দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলন চাকমা ওই জায়গার
বেড়া উচ্ছেদ করতে গেলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বাধা দেন। এ সময়
তিনি পুলিশের সহায়তায় তাড়া করলে গোলাম মোস্তফা নামের এক শিক্ষক মাথায় আঘাত
পেয়ে রক্তাক্ত হন। আহত হন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী।
শিক্ষক আহতের খবরে
বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং মহাসড়ক অবরোধ করে
বিক্ষোভে নামে। এতে প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর
পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে
লাকসাম সেনা ক্যাম্পের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে। প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে অবরোধ তুলে নিলে যান
চলাচল স্বাভাবিক হয়।
লাকসাম সেনা ক্যাম্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিজরা
রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল খায়ের বলেন,
“ওই ৬ শতক জায়গা সিএস ও আরএস রেকর্ডে বিদ্যালয়ের নামে ছিল। বিএসও হয়েছে।
কিন্তু একটি মহলের প্রভাবে বিএস বাতিল করে জমিটি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত
করা হয়। আমরা নিয়ম মেনে লিজের আবেদন করি, কিন্তু বাইরের লোকদের দেওয়া হয়।
আজ উচ্ছেদে আসলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়, তখন সহকারী কমিশনার আক্রমণাত্মক
আচরণ করেন। এতে একজন শিক্ষক আহত হন। পরে ইউএনও স্যার বিষয়টি
সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন।”
এ বিষয়ে লাকসাম থানার
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেড়া
দেওয়ায় এসি ল্যান্ড (ভূমি) উচ্ছেদে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল
নিক্ষেপ করলে এসি ল্যান্ড অফিসের নাজির মিজানুর রহমান আহত হন। পরে পুলিশ ও
সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলন চাকমার বক্তব্যের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় মন্তব্য নেওয়া যায়নি।
বিশেষ
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে সংশ্লিষ্ট
পক্ষদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে নিষ্পত্তির উদ্যোগ
নেওয়া হয়েছে।
