
প্রথম
ওয়ানডে জিতে সিরিজে লিড নিয়েছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে সুপার ওভারে হেরে
যায় টাইগাররা। তবে তৃতীয় ম্যাচে পাত্তাই পেল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটে-বলে
পারফর্ম করে ১৭৯ রানের বড় জয় পেয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজের দল। এই জয়ে ২-১
ব্যবধানে সিরিজ জিতল স্বাগতিকরা।
মিরপুরে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে
নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে
সর্বোচ্চ ৯১ রান করেছেন সৌম্য। এ ছাড়া ৮০ রান করেছেন সাইফ। জবাবে ৩০ ওভার
এক বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আজও শুরু থেকে
দুই প্রান্তে স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। সামনে বড় লক্ষ্য থাকলেও দেখেশুনে
খেলেন দুই ক্যারিবীয় ওপেনার। জুটি ভাঙতে পঞ্চম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে
হয় বাংলাদেশকে। আলিক আথানজেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশকে প্রথম
ব্রেকথ্রু এনে দেন নাসুম।
নিজের পরের ওভারে ফিরে আবারও উইকেটের দেখা পান
নাসুম। বাঁহাতি এই স্পিনারের এবারের শিকার আকিম অগাস্টে। তিন বল খেলে
রানের খাতা খুলতে পারেননি এই টপ অর্ডার ব্যাটার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল
অর্ডারের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ শাই হোপ। গত ম্যাচে তিনি একাই ম্যাচ বের করে
নিয়েছিলেন। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন তানভীর ইসলাম। ১৬ বল খেলে তিনি
করেছেন ৪ রান। হোপের পথেই হেঁটেছেন শারেফানে রাদারফোর্ডও। ১২ রান করা এই
ব্যাটার রিশাদের বলে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন।
শুরুতেই ব্যাটিং অর্ডারে ধস
নামার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা। শেষদিকে জাস্টিন
গ্রেভস-আকিল হোসেনরা পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেছেন। দশ নম্বরে নামা
আকিলের ব্যাট থেকে এসেছে ২৭ রান। যা ইনিংসে কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ
সংগ্রহ।
বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও তানভির।
এর
আগে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে ভালো শুরুর
বার্তা দিয়েছিলেন সাইফ। এরপর আগ্রাসী রূপে হাজির হন সৌম্য সরকারও। উদ্বোধনী
জুটিতে পঞ্চাশ আসে মাত্র ৪৬ বলে। স্পিনে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না দেখে দশম
ওভারে পেস বোলিং অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রেভসের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন
ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ। তবে এই পেসারও সুবিধা করতে পারেননি।
দারুণ
ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সৌম্য। ওয়ানডেতে এটি তার
১৪তম ফিফটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ষষ্ঠ। সৌম্যর পর একই মাইলফলক ছুঁয়েছেন
আরেক ওপেনার সাইফও। তিনি খেলছেন মাত্র ৪৪ বল। ওয়ানডেতে এটি তার প্রথম
ফিফটি।
ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনারই ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। বেশ
প্রাণবন্তও মনে হচ্ছিল তাদের। কিন্তু ইনিংসের ২৬তম ওভারে প্রথম হোঁচট খায়
বাংলাদেশ। ওভারের দ্বিতীয় বলে রোস্টন চেজকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে
জাস্টিন গ্রিভসের হাতে ধরা পড়েন সাইফ হাসান। ১৭৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট
হারায় বাংলাদেশ। ৭২ বলে ৬ ছক্কায় ৮০ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।
সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। তিনিও শেষমেশ ক্যাচ আউট হয়ে ফিরেন। ৮৬ বলে ৯১ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
দুই
ওপেনারের বিদায়ের পর রানের গতি অনেকটাই কমে যায়। তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল
হোসেন শান্ত বেশ কিছু ডট বল খেলেন। তাতে উল্টো চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। চাপ
কমাতে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন হৃদয়। ৪৪ বলে ২৮ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
এরপর শান্ত ফিরেছেন ফিফটির আগে। ৫৫ বলে করেছেন ৪৪ রান।
মিডল অর্ডারে
ব্যর্থ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদরা। আগের দুই ম্যাচে
দারুণ ব্যাটিং করা রিশাদকে প্রমোশন দিয়ে নামানো হয় ছয়ে। তবে এবার ৬ বলে
করেছেন মাত্র ৩ রান।
শেষদিকে ভাল ফিনিশিং দিয়েছেন নুরুল হাসান। ৮ বলে অপরাজিত ১৬ রান করেছেন তিনি। এ ছাড়া মিরাজ করেছেন ১৭ বলে ১৭ রান।
