কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ৪৮দশমিক ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাশের হার। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ শামছুল ইসলাম সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড স‚ত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এ বোর্ড থেকে মোট ৯৯ হাজার ৫৭৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়েছে ৪৮ হাজার ৬৫৭ জন। এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২৬ হাজার ২৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১৬ হাজার ২৫১ জন পাস করেছে। যার পাসের হার ৬২ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মানবিক বিভাগে ৪৮ হাজার ১২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২০ হাজার ৫৯০ জন। পাসের হার ৪৪.০৮ শতাংশ।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে অংশ নেয় ২৭ হাজার ৫৯৪ জন পরীক্ষার্থী; এর মধ্যে ১১ হাজার ৮১৬ জন পাস করেছে। যা ৪৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সর্বশেষ পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের তুলনাম‚লক কম শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। এর আগে এই বোর্ডে ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২০২২ সালে ৯০ দশমিক ৭২ শতাংশ, ২০২৩ সালে ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ২০২৪ সালে ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং এবার ২০২৫ সালে পাস করেছে ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। যা গত পাঁচ বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।
এবছরের ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে আছে। এবারের ফলে ছেলেদের পাশের হার ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ ও মেয়েদের পাশের হার ৫৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ এ এগিয়ে আছে মেয়েরা। ছেলেদের জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ৯৫৮টি আর এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ৭৪৯ জন মেয়ে শিক্ষার্থী।
এবার কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের ৯ কলেজে কেউ পাশ করেনি৷ অপরদিকে শতভাগ পাশ করেছে ৫টি কলেজ।
ফলাফলের বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: শামছুল আলম বলেন, অন্যান্য সময়ে ভেন্যু কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক বেশি থাকতো। এবার ১৬২টি ভেন্যু কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। ভেন্যু কেন্দ্রের কারণে অনেক শিক্ষার্থী সুবিধা পেত, এবার সে সুযোগ ছিল না। এছাড়া ইংরেজিতে পাসের হার মাত্র ৬৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, উচ্চতর গণিতেও ফল খারাপ। ইংরেজিতে ফেলের হার বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিক ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ফলাফল হাতে পেয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী রায়হান মিয়া বলেন, ইংরেজি পরীক্ষায় প্রশ্ন কঠিন ছিল, বিশেষ করে রিডিং অংশটা। আমরা অনেক চেষ্টা করেও ভালো লিখতে পারিনি। সেখানেই আমাদের অনেকের ফল খারাপ হয়েছে।
কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তাসনিয়া হোসাইন বলেন, আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আগের মতো প্রশ্ন আসবে ভেবে। কিন্তু ইংরেজি ও গণিত দুইটাই ছিল নতুন ধাঁচের।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গাজী মোহাম্মদ গোলাম সোহরাব হাসান বলেন,
অনলাইন ও অনিয়মিত ক্লাসের কারণে শিক্ষার্থীদের বেসিক দুর্বল হয়েছে। উচ্চতর গণিতে প্রশ্নের ধরণে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী পুরোনো স্টাইলে প্রস্তুতি নিয়েছিল। ফলে ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
