ব্যাটিংয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। মিডল অর্ডার ব্যর্থতায় দুইশ রানও স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারেনি তারা। এত অল্প পুঁজি নিয়ে ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে লড়াই করার সাহসও হয়তো খুব কম মানুষই দেখেছিলেন। তবে নতুন বলে স্বপ্নের বীজ বুনে দেন মারুফা আক্তার। এক প্রান্তে পেস আর সুইয়ে রীতিমতো আগুন ঝরিয়েছেন তিনি। আর অন্য প্রান্তে স্পিনের জাল বিছিয়ে ইংলিশদের আটকে রাখেন নাহিদা আক্তার। মাঝের ওভারগুলোতে ফাহিমার ঘ‚র্ণিতে চোখে রীতিমতো সর্ষে ফুল দেখেছেন ইংলিশ ব্যাটাররা। একশর আগেই ৫ ব্যাটারকে ফিরিয়ে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। তবে হেথার নাইটের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলার স্পিন জাল ছিঁড়ে কোনোরকমে বেরিয়ে গেছে ইংলিশরা।
গুয়াহাটিতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেছেন সুবহানা। জবাবে ৪৬ ওভার এক বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৯ রান করেছেন হেথার নাইট।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন মারুফা। এমি জোনসকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই পেসার। সাজঘরে ফেরার আগে ৩ বলে ১ রান করেছেন এমি। ইনিংসের সপ্তম ওভারে আবারো ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন মারুফা। এবার তার শিকার টাম্মি বাউমান্ট। ১৭ বলে ১৩ রান করেছেন তিনি।
প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে দুই প্রান্ত থেকেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। ফাহিমা-নাহিদাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইংলিশদের রানের চাকা টেনে ধরে টাইগ্রেসরা। চাপে পড়ে উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। নাইটের সঙ্গে নেট স্কাভিয়ার ব্রান্টের জমে উঠা তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙেন ফাহিমা। ৩২ রান করে এই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাজ ঘরে ফিরলে বিপাকে পড়ে তার দল।
সোপি ডানকলি, এমা ল্যাম্ব ও আলিস ক্যাপসিদের দ্রæত ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে উদ্ধার করেছেন নাইট। এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রেখেছেন তিনি। শেষদিকে চার্লি ডিনকে সঙ্গে নিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন। ১১১ বলে অপরাজিত ৭৯ করেছেন নাইট, আর ডিনের ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ২৭ রান।
বাংলাদেশের হয়ে ১৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন ফাহিমা। এ ছাড়া ২৮ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন ফাহিমা, ২৪ রানে সানজিদা আক্তার মেঘলার শিকার একটি।
এর আগে গত ম্যাচে ফিফটি করা রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক আজ ব্যর্থ হয়েছেন। ৯ বল খেলে ৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তবে আরেক ওপেনার শারমিন আক্তার উড়ন্ত শুরু পেয়েছিলেন। দারুণ শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৬ চারে ৫২ বলে করেছেন ৩০ রান।
ঝিলিক দ্রæত ফেরায় শক্ত ভিত পেতে গুরু দায়িত্ব ছিল জ্যোতির কাঁধে। তবে অধিনায়ক পুরোপুরি ব্যর্থ। দুই বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। অধিনায়ক ডাক খেয়ে ফেরায় সেটার প্রভাব পড়ে রানরেটে। মাঝের ওভারগুলোতে ধীরগতির ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ।
এক প্রান্তে সুবহানা মুস্তারি উইকেট আগলে রাখলেও আরেক প্রান্তে ছিল ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। স্বর্ণা আক্তার, ঋতু মণি, ফাহিমা খাতুন ও নাহিদা আক্তারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তাতে দেড়শ রান করা নিয়েও শঙ্কা জেগেছিল।
তবে শেষদিকে রীতিমতো ঝড় তোলেন রাবেয়া খাতুন। ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ২৭ বলে করেছেন অপরাজিত ৪৩ রান। ৬ চার ও এক ছক্কায় প্রায় ১৬০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। মুস্তারির ব্যাট থেকে এসেছে ১০৮ বলে ৬০ রান। এটি তার অভিষেক ওয়ানডে ফিফটি।এক প্রান্তে সুবহানা মুস্তারি উইকেট আগলে রাখলেও আরেক প্রান্তে ছিল ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। স্বর্ণা আক্তার, ঋতু মণি, ফাহিমা খাতুন ও নাহিদা আক্তারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তাতে দেড়শ রান করা নিয়েও শঙ্কা জেগেছিল।