ঐক্যবদ্ধ না থাকলে বাংলাদেশে গুপ্ত স্বৈরাচারের উত্থান হতে পারে বলে শংকা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, গত ১৬ বছর বাংলাদেশে ডাকাত পরেছিলো। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সেই ডাকাতকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে; স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন আমাদেরকে দেশ গড়ার কাজে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সারা বাংলাদেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলছি, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে না পারি যেভাবে দেশ স্বাধীনের পরে যেভাবে স্বৈরাচার চেপে বসেছিলো, ওয়ান ইলেভেনের পরে ২০০৮ সালে নির্বাচনে যেভাবে সৈরাচার বাংলাদেশে চেপে বসেছিলো- যদি আমরা জনগণকে ঠিক বুঝাতে সক্ষম না হই- তাহলে বলা যায় না বাংলাদেশে আগামী দিসে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব ঘটতে পারে। কাজেই গুপ্ত স্বৈরাচার থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে, মানুষকে রক্ষা করতে হবে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা টাউন হল মাঠে দক্ষিণ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান আরো বলেন, বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশের মানুষকে সাথে নিয়ে আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করেছে জনগণকে সাথে নিয়ে। আমাদেও নেতাকর্মীরা হত্যা, খুন ও গুমের শিকার হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছে। হাতকড়া পরা অবস্থায় হাসপাতালে মারা গিয়েছে। জেলের ভিতরে আমাদেও নেতাকর্মীরা মারা গিয়েছে। হাজারো হাজারো নেতাকর্মীকে পঙ্গুত্ব বরন করতে হয়েছে। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, এখন সামনে আমাদেও দেশ পুণর্গঠন। তাই দেশকে পুণর্গঠন করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে আমাদেও সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জনগণই বিএনপির শক্তি উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন বলেন, সারা বাংলাদেশের আমাদের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদেরকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই। আমাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে। আমি বার বার বলছি, জনগণই হলো সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। কাজেই সেই জনগণকে আমাদেও সাথে থাকতে হবে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা আজকে বলছে, ইসলামের জন্য একটি আলাদা বাক্স বসাই, দেখি ওখানে কি হয়। কারা এই স্লোগান দিচ্ছে আপনারা বুঝে নেন। ইসলাম কোনো কোটা রাজনীতি নয়, ইসলাম কোনো রাজনৈতিক বাক্স নয়। আমরা সবাই বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করি। অবশ্যই অন্য ধর্মের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারও আমরা নিশ্চিত করেছি ও করবো।
এসময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি, রাজনীতি দিয়ে ইসলামকে বিভক্ত করতে চায় যে শক্তি, সে শক্তিকে রাজনৈতিকভাবেই আপনারা মোকাবেলা করবেন। যারা একটি কিতাব নিয়ে গ্রামে গ্রামে যাচ্ছে জান্নাতের টিকিট নাকি তারা বিক্রি করতে চায়। যারা এই টিকিট বিক্রি করছে তারা ধর্ম ব্যবসায়ী।
৭১-এর চেতনার মতো ২৪-এর চেতনাও যেনো কেউ বিক্রি করতে না পারে সেজন্যও সবাইকে সচেতন থাকার আহবান জানান তিনি। বক্তব্যে শুরুতে দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের দূরাবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, অঘেিিাষত ভাবে আমরা জানি, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর ৫ লক্ষ কোটি টাকা খেলাপি ঋণে জর্জরিত।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আলহাজ্ব মনিরুল হক চৌধুরী, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কেন্দ্রীয় শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আমিরুজ্জামান আমির, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক আক্তারুজ্জামানসহ নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে জাকারিয়া তাহের সুমনকে সভাপতি এবং আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়।