আজ
শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষষ্ঠী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয়
উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ। মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য
দিয়ে মায়ের আমন্ত্রণ, অধিবাস এবং মঙ্গলঘট স্থাপন করা হবে প্রতিটি পূজা
মন্ডপে। ঢাক-ঢোল, কাঁসাসহ বাদ্য যন্ত্রের সাথে উলুর ধ্বনীতে মুখরিত হবে
মন্ডপে মন্ডপে। তবে প্রতি বছরের ন্যায় এবার ষষ্ঠী তিথিতে হয়নি মায়ের বোধন।
পঞ্জিকার তিথি অনুসারে বাধ্য হয়েই পঞ্চমীর রাতে অর্থাৎ শনিবার (২৭ জুলাই)
রাতে মায়ের বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা
চৈতন্যপ্রাপ্ত। শরৎকালের শারদীয় দুর্গাপূজায় বোধনের বিধান রয়েছে। বিভিন্ন
পুরাণ অনুসারে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে রাক্ষসরাজ রাবণকে বধের উদ্দেশ্যে
দুর্গাপূজা করেন। তিনি অকালে এ বোধন করেন বলেই এটি অকালবোধন নামে খ্যাত।
তবে বসন্তকালে চৈত্র মাসে যে দুর্গাপূজা বা বাসন্তীপূজা অনুষ্ঠিত হয়, তাতে
বোধনের প্রয়োজন হয় না।
সাধারণত দেবী দুর্গার বোধন হয় ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়।
আজ রবিবার মহাষষ্ঠী হলেও সকাল ১১টা ১১ মিনিটের মধ্যে ষষ্ঠী তিথি শেষ। আজ
সন্ধ্যায় ষষ্ঠী তিথি না পাওয়ায় পঞ্চমী দিন শেষে সন্ধ্যায় ষষ্ঠী তিথিতে বোধন
অনুষ্ঠিত হয়। বেল তলায় মায়ের বোধন অনুষ্ঠিত হয়। দিন গণনায় আজ মহাষষ্ঠী
হলেও তিথির হিসেবে আজ সকাল ১১টা ১২ মিনিটের পর সপ্তমী শুরু। বোধন শেষে
রবিবার দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা। তবে আমাদের
অঞ্চলে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ হয় হয়ে থাকে এবং সপ্তমী কল্পারম্ভ বেশি থাকায়
সোমবার সপ্তমীর বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
চান্দিনা রাজকালী বাড়ির
পুরহিত অমিও ভট্টাচার্য জানান- তাই শাস্ত্র মতে যদি ষষ্ঠীর উপযুক্ত
সন্ধিকাল না পাওয়া যায়, তবে পঞ্চমীর দিন সন্ধ্যায়ই বোধন করতে হয়। অর্থাৎ
এবার ষষ্ঠী তিথি পুরোপুরি সন্ধ্যায় মিলছে না। তাই নিয়ম মেনে পঞ্চমীর
সন্ধ্যায় (শনিবার) দেবী দুর্গার বোধন করা হয়েছে। মূলত তিথির কারণে এমনটা
হচ্ছে।
পাঁচ দিনের এ উৎসব শেষ হবে আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা
বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। এবার দেবী দুর্গার আগমন হবে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে
চড়ে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলা বা পালকিতে চড়ে। এবার কুমিল্লা
মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলায় ৭৯৭ পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয়
দুর্গোৎসব।