কেমন
হবে চলতি বছর এশিয়া কাপ আর আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য
বাংলাদেশের প্রস্তুতি? যথাক্রমে মহাদেশীয় ও বিশ্ব আসরে অংশ নেওয়ার আগে
টাইগারদের প্রস্তুতির কার্যক্রম কোথায় হবে? শেরে বাংলার স্লো ও দ্বিমুখী
গতির পিচে নাকি সিলেট ও চট্টগ্রামের তুলনামূলক ব্যাটিংফ্রেন্ডলি উইকেটে?
এশিয়া
কাপের আগে বাংলাদেশের অনুশীলনের ধরনটা কেমন হবে? দেশের মাটিতে নিজেদের
মধ্যে প্রথাগত অনশীলন ম্যাচ খেলবেন টাইগাররা নাকি প্রস্তুতি পর্বে দেশের
মাটিতে কোনো ভিনদেশি দলের সঙ্গে সিরিজ খেলবে?
ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা
শঙ্কার জায়গা রয়েছে। ফর্মে থাকলেও চরম ধারাবাহিকহীনতায় ভুগছেন দুই বাঁহাতি
তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। একদিন ভালো খেলে
পরদিনই আবার খারাপ খেলেন। বিকল্প ভেবে খেলানো হলো নাইম শেখকে। তিনিও চরম
হতাশ করলেন সবাইকে। বোঝাই গেল ধারাবাহিকতায় কমতি থাকলেও বিকল্প হিসেবে
তানজিদ তামিম ও ইমন এখন নাইম শেখের চেয়ে অনেক ভালো।
মিডল অর্ডারেও
ধারাবাহিকভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেন না কেউ। তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটের ধার
কমে গেছে। জাকের আলী অনিক ও শামীম পাটোয়ারীর ব্যাটও শাণিত হচ্ছে না
ধারিাবাহিকভাবে। মেহেদী হাসান মিরাজ যেন নিজেকে কোথায় হারিয়ে ফেলছেন।
অর্থাৎ
মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানের জায়গা পূরণ হয়নি একদমই।
বিশাল ঘাটতি ও শূন্যতা রয়েই গেছে। ভালো মানের বোলিংয়ের বিপক্ষে সেটা হয়তো
আরও প্রকট হবে।
অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী ও সাইফউদ্দিনের ব্যাটিং শৈলী,
টেকনিক ও অ্যাপ্রোচও আন্তর্জাতিক মানে খুব কার্যকর না। তাদের ঘষা-মাজার
দরকার আছে যথেষ্ট। এমন ব্যাটিং লাইন-আপ নিয়ে এশিয়া কাপে কতটা ভালো করতে
পারবে বাংলাদেশ, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
ক্রিকেট অপারেশন্সের
চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিমের কণ্ঠেও উন্নতির তাগিদ। তিনি বলেন, ‘সব
মিলিয়ে একটা ‘আপওয়ার্ড গ্রাফ’ আছে। আমরা এমন এক জায়গায় চলে যাইনি, যেখানে
আমরা খুব নিশ্চিন্ত থাকতে পারি। সামনে আরও পথ পাড়ি দিতে হবে। আমাদের সামনে
এশিয়া কাপ আছে। আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আমাদের প্রথম
পরীক্ষা হবে এশিয়া কাপে। সেখানে আমাদের শক্ত ও কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে
হবে। সেখানে বোঝা যাবে, দল হিসেবে আমরা কোথায় পৌঁছাতে পেরেছি।’
এশিয়া
কাপের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিসিবির এই শীর্ষকর্তা জানান,
ক্রিকেটার বিগ হিটিং সক্ষমতা বাড়াতে একজন কোচ আনার চেষ্টা চলছে। আশা করছি
তিনি এশিয়া কাপের আগেই দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
কে হবেন সেই কোচ? নাম না বললেও ফাহিম জানান, সেই কোচ এশিয়ার বাইরে থেকে আসবেন। এছাড়া একজন মনোবিদও আনা হবে।
বাংলাদেশ
কি এই কন্ডিশনেই এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নেবে? অনুশীলন বা প্রস্তুতিপর্ব
ঢাকায় নাকি সিলেট-চট্টগ্রামে হবে? বিদেশে গিয়ে বা কোনো ভিনদেশি দলকে আনার
পরিকল্পনা আছে কি না?
বিসিবি পরিচালক ফাহিম এসব প্রশ্নের জবাব দিতে
গিয়ে জানান, তারাও (বিসিবি) চান ভালো উইকেটে অনুশীলন করতে। একটা আদর্শ
উইকেটে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নিতে।
ফাহিম বলেন, ‘এশিয়া কাপের প্রস্তুতি
আমরা নেব ভালো উইকেটে। স্কিল নিয়ে কাজ হবে। তার আগে একজন পাওয়ার হিটিং কোচ
নিয়ে আসবো। একজন মনোবিদও যুক্ত হবেন।’
‘তবে খেলার ক্ষেত্রে আমরা চাইবো
১৮০ থেকে ২০০ রানের উইকেটে অনুশীলন করতে। সেটা ঢাকায় হলে ঢাকায়, সিলেটে হলে
সিলেটে; না হয় চট্টগ্রামে। আমরা সেরকম উইকেট চাইবো গ্রাউন্ডস কমিটির কাছে।
তারা যেখানে নিশ্চিত করতে পারবেন, সেখানেই হবে অনুশীলন’-যোগ করেন ফাহিম।
এদিকে
ফাহিম জাগো নিউজকে আরও একটি তথ্য দিয়েছেন। তা হলো- বিসিবি চেষ্টা করছে
এশিয়া কাপের আগে ভিনদেশি দলের সঙ্গে দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার।
বোর্ডের
এই পরিচালক বলেন, ‘চেষ্টা করবো বাইরে থেকে কোনো দলকে এনে একটা সিরিজ
খেলার। না হয় অভ্যন্তরে ম্যাচ খেলবো। তবে আমরা সাধারণত যে ওয়ার্মআপ ম্যাচ
খেলি, তা নয়। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হবে। ন্যাশনাল টিম বনাম রেস্ট অব দ্যা
ন্যাশনাল টিমের মধ্যে খেলা হবে। একটা সিরিজের মতো। সেটা ভালো কন্ডিশনে।’